


স্তিফান, ফর্তুনাত, এবং আখায়িক
12-06-2025


পৌলের সুপারিশ পত্র
19-06-2025ঈশ্বরের গৌরবের জন্য জীবনযাপন করা


“আইস, আমরা সমস্ত বিষয়ের উপসংহার শুনি; ঈশ্বরকে ভয় কর, ও তাঁহার আজ্ঞা সকল পালন কর, কেননা ইহাই সকল মনুষ্যের কর্তব্য। কারণ ঈশ্বর সমস্ত কর্ম এবং ভাল হউক, কি মন্দ হউক, সমস্ত গুপ্ত বিষয়, বিচারে আনিবেন” (১৩-১৪ পদ)।
আজকে আমরা ঈশ্বরের গৌরব মহিমা এবং এর সাথে সম্পর্কিত কিছু ব্যবহারিক বিষয় নিয়ে আমাদের সংক্ষিপ্ত আলোচনা শেষ করতে যাচ্ছি। ঈশ্বরেরই গৌরব করাই যে মানুষের প্রধান লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য তা আমরা অনেকভাবে বাইবেলে দেখেছি। তিনি তাঁকে প্রতিফলিত করার জন্য এবং খ্রীষ্টের মধ্যদিয়ে তাঁর গৌরবের উপস্থিতিতে প্রবেশ করার জন্যই আমাদেরকে তাঁর প্রতিমূর্তিতে সৃষ্টি করেছেন (আদিপুস্তক ১:২৬-২৮; ইব্রীয় ১২:১৮-২৯)। অধিকন্তু, তিনি আমাদেরকে মুক্ত করেছেন, যেন আমরা তাঁকে সম্মুখা-সম্মুখী দেখতে পারি (১ যোহন ৩:৩)। সৃষ্টিতে, উদ্ধারে, এবং আরাধনাতে আমাদের জন্য ঈশ্বরের উদ্দেশ্যের আলোকে, আমাদের জীবন যাপনের একমাত্র প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত ঈশ্বরের গৌরব করা। আমরা যদি আমাদের নিজেদেরকে ঈশ্বরের প্রেমময় সৃষ্টির উদ্দেশ্যের কাতারে নিয়ে আসতে চাই তবে আমরা তাঁর গৌরবের অন্বেষণ করে এটা করতে পারি।
অতএব, আমাদেরকে অবশ্যই এই প্রশ্ন করা উচিত: যেহেতু জীবনের অর্থ হলো ঈশ্বরের গৌরব করা এবং এমনভাবে জীবন যাপন করা যেন আমাদের লক্ষ্য হলো সেই গৌরবকে জানা এবং জানানো, আমরা কিভাবে সেই লক্ষ্যকে সম্পাদন করছি? যেহেতু বংশপরষ্পরায় মণ্ডলীর স্বীকৃতি রয়েছে, উপদেশক ১২:১৩ পদ আমাদেরকে উত্তরটা দেয়: “ঈশ্বর ভয় এবং তাঁর আজ্ঞা পালন করা।”
উপদেশক একটি চমৎকার পুস্তক, কিন্তু খ্রীষ্টিয় সমাজ বর্তমানে প্রায়ই তা অবহেলা করে। যেহেতু পুস্তকটি কোন না কোনভাবে হতাশার পুস্তক হিসাবে পরিচিত সম্ভবত এটা এর একটা কারণ হতে পারে। কেউ কেউ আবার শিক্ষা দিতে পারে যে, উপদেশক শিক্ষা দেয় জীবন অসার। কারণ, উপদেশকের লেখক বার বার জীবনের অসারতা নিয়ে কথা বলেছেন।
যাই হউক, উপদেশক আমাদেরকে জীবনের অসারতা সম্পর্কে শিক্ষা দেয় না। বরং, এটি বর্তমান জীবন প্রনালীর, পরিবর্তনশীল জীবনের ক্ষণস্থায়ী প্রকৃতির উপর আলোকপাত করে এবং সেই বাস্তবতার আলোকে জীবন যাপন করতে আহবান করে। বস্তুত, ঈশ্বর আমাদেরকে যে পার্থিব উপহার দিয়েছেন তা আমাদের উপভোগ করা উচিত, এর মধ্যে স্বামী/স্ত্রী, মর্যাদাসম্পন্ন শ্রম, ভাল খাবারও রয়েছে (৯:৭–১১)। যাই হউক, ঈশ্বরের উদ্দেশ্যেই আমাদের এই সমস্ত কিছু করা উচিত, কারণ এই জীবনের উত্তম সমস্ত কিছুই চলে যাবে কিন্তু একমাত্র তিনিই চিরকাল থাকেন। আমরা যখন এই জীবনের উত্তম কিন্তু ক্ষণস্থায়ী জিনিসগুলেকে আমাদের জীবনের মূল লক্ষে পরিনত করি তখন আমরা বিপথে যাই।
এই সমস্ত কিছু করা থেকে আমাদেরকে বিরত রাখার জন্য, উপদেশক ১২ আমাদেরকে আমাদের সমস্ত জীবনকে সদাপ্রভুর দিকে চালিত করতে বলে। তাঁকে স্মরণ করার জন্য আমাদেরকে আমাদের জীবনের শেষদিন পর্যন্ত অপেক্ষা করা উচিত নয়, কেননা আমাদের উত্তম দিনগুলোতে, তরুন বয়সে আমাদের তাঁকে স্মরণ করা উচিত (১ পদ)। সমস্ত কিছুর উপরে, তার গৌরব অন্বেষন করার অর্থ হলো ঈশ্বরকে ভয় করা এবং তাঁর আজ্ঞাসকল পালন করা (১৩-১৪ পদ)। এর অর্থ হলো আমাদের সমস্ত জীবন ঈশ্বরের উপস্থিতিতে বা তাঁর সম্মুখে যাপন করা। অন্য কথায়, আমাদের সবসময় এই সচেতনতায় জীবন যাপন করা উচিত যে সদাপ্রভু সর্বদা আমাদের উপর দৃষ্টি রাখছেন, এবং তাই আমাদের সবসময়ের লক্ষ্য হওয়া উচিত তাঁকে সস্তুষ্ট করা।
ঈশ্বরের মুখ
যেহেতু সদাপ্রভু আমাদের প্রাত্যহিক জীবনযাপনে তাঁকে দৃশ্যমান উপায়ে প্রকাশ করতে চান না, তাই খুব সহজেই আমরা ভুলে যেতে পারি যে, তিনি সবর্দা আমাদের উপর দৃষ্টি রেখেছেন। আমরা যদি স্মরণে রাখতাম যে, তিনি আমাদের সঙ্গে সঙ্গে আছেন এবং আমরা যা চিন্তা করি, যে সমস্ত কাজ করি এবং যা অনুভব করি তা তিনি দেখেন, তবে আমাদের জীবন কেমন আলাদা হতো ? আসুন আমরা স্মরণে রাখি যে, ঈশ্বরের দৃষ্টি সর্বদা আমাদের উপরে রয়েছে যেন আমরা আমাদের জীবনে তাঁকে সম্মান করতে অনুপ্রাণীত হই।
এই প্রবন্ধটি মূলতঃ লিগনিয়্যার মিনিস্ট্রিজ ব্লগে প্রকাশিত হয়েছিল।