


ঈশ্বরের গৌরবের জন্য জীবনযাপন করা
17-06-2025


মৃত্যু এবং জীবনের সুগন্ধ
24-06-2025পৌলের সুপারিশ পত্র


“তোমরাই আমাদের পত্র, আমাদের হৃদয়ে লিখিত পত্র, যাহা সকল মনুষ্য জানে ও পাঠ করে;” ( ২ পদ)|
আমরা যেমন দেখেছি, পৌলের “মনোদুঃখ জনক পরিদর্শনের” সময় যে ব্যক্তি তার বিরাধীতা করেছিল তাকে শাসন করতে না পারার জন্য করিন্থীয়দের অনুতাপের সংবাদ পেয়ে, তিনি ২ করিন্থীয় পত্রটি লিখেছেন (২ করিন্থীয় ১-৪ পদ দেখুন)। এই পত্র লেখার উদ্দেশ্য ছিল তার আনন্দ ব্যক্ত করা যে, তারা আবার সত্য অনুযায়ী কাজ করছে এবং তার সাথে সম্পুর্ণ পুর্নমিলন যাঞ্চা করছেন| তবুও, এটাই তার একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল না| ভাক্ত প্রেরিতরা করিন্থীয়দের জন্য একটা সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছিল, তারা পৌলের সত্যিকারের প্রেরিতত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলছিলেন| পৌল প্রথমে ২: ১৭ পদে এই সমস্ত ভাক্ত প্রেরিতদের সম্পর্কে উল্লেখ করেছেন, একদল শিক্ষক যারা “ঈশ্বরের বাক্যের ব্যবসা করছিলেন” তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি পরোক্ষভাবে কথা বলেছেন|
সেই সমস্ত ভ্রান্ত শিক্ষকদের সম্পর্কে এবং তাদের শিক্ষার বিষয়বস্তু সম্পর্কে জানাটাও কঠিন| তাদের সম্পর্কে পৌলের বক্তব্য wQj যে, তারা “ঈশ্বরের বাক্যের ব্যবসায়ী” এই বিষয়টা ইংগিত করে যে তাদের মূল্য উদ্দেশ্য ছিল অর্থ| সম্ভবত তারা কোন কোন প্রকার প্রাচীন কালের সম্বৃদ্ধির সুসমাচার প্রচার করতেন, যে ধরণের সুসমাচার বলে যে বিশ্বাসীরা সম্পদশালী হবেন এবং তারা সফল হবেন| তাই পৌলের দুঃখভোগের সময় যা তাদের সমালোচনার সাথে মানানসই, সত্যিকারের প্রেরিত হলে কেন তিনি দুঃখভোগ করবেন, যার উত্তর পৌল ১০-১২ অধ্যায়ে দিয়েছেন| ৩ অধ্যায়ে, মোশির পরিচর্যার চেয়ে নূতন নিয়মের পরিচর্যা যে আরও বেশী শ্রেষ্ঠ এই বিষয়ের উপর পৌলের জোড় দেওয়া ইংগিত করে যে মোশির নিয়মের উপর তাদের যতটুকু যুক্ত থাকা উচিত ছিল তারচেয়ে তারা বেশী আকঁড়ে ধরে রেখেছিল|
আজকের শাস্ত্রাংস, পুরাতন নিয়ম এবং নূতন নিয়মের মধ্যে পৌল যে বৈসাদৃশ্য করছেন তা দিয়ে শুরু হয়েছে| ২ করিন্থীয় ৩:২-৩ পদে, পৌল করিন্থীয়দের ঈশ্বরের আত্নার দ্বারা, প্রস্তর ফলকে নয়, কিন্তু মানুষের হৃদয়ে লিখিত পত্র হিসাবে উল্লেখ করেছেন| পৌল পুরাতন নিয়মের বাহ্যিক প্রকৃতি, যা আদেশ করতে পারে কিন্তু পালন করার শক্তি দিতে পারে না, এবং নুতন নিয়মের রুপান্তরকারী কাজ, যা ঈশ্বরের সেবা করার জন্য শক্তি সরবরাহ করে এই দুইয়ের মধ্যে একটি বৈসাদৃশ্য স্থাপন করেছেন| পুরাতন নিয়মের ব্যবস্থা দশ আজ্ঞা হিসাবে ঈশ্বর প্রস্তর ফলকে লিখে দিয়েছিলেন, যেমন মোশি গ্রহণ করেছিলেন কিন্তু ইস্রায়েল সেই ব্যবস্থা লঙ্ঘণ করেছিলেন (যাত্রাপুস্তক ৩২)|
আমরা যেমন ২ করিন্থীয় ৩:১ পদে দেখেছি, প্রেরিত একটি সুপারিশ পত্রের চাহিদা হতে সরে গিয়ে দুই নিয়মের মধ্যে বৈসাদৃশ্যের উপর তার ঈশ্বতাত্বিক আলোচনায় এই বৈসাদৃশ্য স্থাপন করেছেন| প্রাচীন যুগে, শিক্ষকগন যখন তারা একটি নূতন জায়গায় যেতেন, তারা প্রায়ই শিক্ষার্থীদের বা অন্যদের কাছ থেকে একটি সুপারিশ পত্র নিয়ে আসতেন| এই কারণে ভ্রান্ত শিক্ষকগন পৌলের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছিলেন, সম্ভবত কারণ তিনি এমন সুপারিশ পত্র বহন করেন নি| পৌলের উত্তর হলো এই যে করিন্থীয়রা নিজেরাই তার সুপারিশ পত্র, ঈশ্বর যেমন নূতন নিয়মের প্রতিজ্ঞা পুরণ করে তাঁর ব্যবস্থা তাদের হৃদয়ে লিখেছেন (যিরমিয় ৩১:৩১-৩৪; ইব্রীয় ৮)|
ঈশ্বরের মুখজন ক্রিসস্টোম বলেছেন, শিষ্যদের গুণাবলী হলো যে, কোন পত্রের তুলনায় শিক্ষকের প্রশংসা করা|” করিন্থীয়দের নিয়ে পৌল এত বেশী আত্ন-বিশ্বাসী ছিলেন যে, তারা তার শিক্ষার সত্যিকারের একটি জীবন্ত প্রমান হিসাবে কাজ করতে পারতো| একইভাবে যারা আমাদেরকে প্রভাবিত করেছেন আমরাও পরিচর্যাতে তাদের সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ সুপারিশ হিসাবে কাজ করতে পারি| আমরা যদি কোন একজন শিক্ষককে অন্যদের কাছে সুপারিশ করতে চাই তবে আমাদের জীবন হবে সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ সাক্ষ্য|
এই প্রবন্ধটি মূলতঃ লিগনিয়্যার মিনিস্ট্রিজ ব্লগে প্রকাশিত হয়েছিল।