আর. সি. স্প্রৌলকে (১৯৩৯-২০১৭) স্মরণ করা
স্টিফেন নিখলস কর্তৃক সংকলিত, ডিসেম্বর ১৪, ২০১৭
আর. সি. স্প্রৌল, ধর্মতত্ত্ববিদ, পালক, এবং লিগনিয়্যার মিনিস্ট্রিজের প্রতিষ্ঠাতা, শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায়, ৭৮ বছর বয়সে, ১৪ই ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে মৃত্যুবরণ করেন। ডঃ স্প্রৌল মৃত্যু কালে তার শৈশবের প্রিয়তমা ও স্ত্রী ৫৭ বছর বয়সী স্ত্রী, ভিস্তা এন (ভূরিস); তাদের মেয়ে, শ্যারি স্প্রৌল দরতিয়্যাক, এবং তার স্বামী, ডেনিস; এবং তাদের পুত্র, ডঃ আর. সি. স্প্রৌল, জুনিয়র, এবং তার স্ত্রী, লিসাকে রেখে যান। স্প্রৌল পরিবারে এগারোজন নাতি-নাতনি আছে, এক নাতনি মারা গেছে, এবং সাত পুতি আছে।
আর. সি. স্প্রৌল ধর্মতত্ত্ববিদ ছিলেন যিনি মণ্ডলীর সেবা করেছেন। তিনি সংষ্কারকদের শুধু তাদের বার্তার বিষয়বস্তুর জন্য নয়, কিন্তু তারা যেভাবে লোকদের কাছে সেই বার্তাকে নিয়ে গেছেন তার জন্য তাদের প্রশংসা করেছেন। তিনি তাদেরকে “যুদ্ধক্ষেত্রের ধর্মতত্ত্ববিদ” হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন। অনেকেই আর. সি. স্প্রৌলের শিক্ষার মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো সংষ্কারের ৫টি “শুধু-মাত্র” [সোলা] বিষয়ে শুনেছেন। আর. সি. যখন মার্টিন লুথারের বিষয়ে শিক্ষা দিতেন, তিনি এমনভাবে শিক্ষা দিতেন যেন ষোড়শ শতাব্দীর সংষ্কারকের সাথে তার সাক্ষাৎ হয়েছিল। “শুধু-মাত্র শাস্ত্র” কথার প্রতি আর. সির অঙ্গীকার বাইবেলের অভ্রান্ততার উপর শিকোগো স্ট্যাটমেন্ট অন বিব্লিক্যাল ইনএ্যরেন্সি (১৯৭৮) লেখা এবং পক্ষে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখতে পরিচালনা দিয়েছিল। তিনি ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল অন বিব্লিক্যাল ইনএ্যারেন্সির প্রেসিডেন্ট হিসাবেও সেবাদান করেছেন। “শুধু-মাত্র বিশ্বাস” একমাত্র বিশ্বাসেই নির্দোষিতার প্রতি তার অঙ্গীকারের কারণে, আর. সি. ১৯৯৪ সালে ইভানজেলিক্যালস এন্ড ক্যাথলিকস টুগেদারের (ইসিটি) বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়েছিলেন। পরবর্তীতে তিনি নিউ পারস্প্যাকটিভ অন পল মত এবং দ্যা ফেডার্যাল ভিশন মতেরও বিরোধীতা করেন। সংষ্কারকদের মতই, আর. সি. ঐতিহাসিক মূলধারার খ্রিষ্টানত্বের কেন্দ্রীয় ও মৌলিক মতবাদের পক্ষে সাহসী পদক্ষেপ নিতে আগ্রহী ছিলেন। তিনি ঈশ্বরের বাক্য এবং সুসমাচারের কর্তৃত্বের রক্ষক ছিলেন।
একজন প্রশিক্ষিত দার্শনিক ও ধর্মতত্ত্ববিদ হিসেবে, আর. সি. উচ্চ-মানের পক্ষ-সমর্থনবিদ্যার এক প্রধান সহায়ক ছিলেন। তিনি ভ্রূণ-রক্ষার পক্ষে শক্ত অবস্থানের জন্য পরিচিত ছিলেন, একবার তিনি এও বলেছেন যে, গর্ভপাত হয়তঃ আমাদের সময়ে গুরুত্বপূর্ণ নৈতিক ইস্যু। তিনি, সর্বোপরী, এক ধর্মতত্ত্ববিদ ছিলেন। তিনি ঈশ্বর বিষয়ক মতবাদকে ভালবাসতেন। এই ভালবাসার কারণেই, তিনি ঈশ্বরকে জানার, প্রশংসা করা, এবং আরাধনা করার পথ পেয়েছেন। ঈশ্বর বিষয়ক মতবাদ আর. সি. স্প্রৌলের কাজ ও রেখে যাওয়া দায়ের চাকার কেন্দ্রবিন্দু, যার প্রমাণ তার অত্যুচ্চমানের লেখা, দ্যা হলিনেস অফ গড-এ (১৯৮৫) দেখা যায়। বিশ্বাসের এক পিতা এবং পিতামহ হিসেবে, তিনি পুরো এক প্রজন্মকে বাইবেলের ঈশ্বরের মুখোমুখি হতে সাহায্য করেছেন।
পিটসবার্গের সন্তান হিসেবে, রবার্ট চার্লস স্প্রৌল ১৯৩৯ সালের ১৩ই ফেব্রুয়ারী, রবার্ট সিসিল স্প্রৌল এবং মেরি এন (ইয়ারদিস) স্প্রৌলের ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪২ সালের ক্রিস্টমাস ইভের সময়, আর. সি’র পিতা, যার পিটসবার্গ শগরে এক একাউন্টিং ফার্ম ছিল, তিনি মরক্কোর কাসাব্ল্যাঙ্কাতে আসেন, এবং দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের সময় সেনাবাহিনীতে কাজ শুরু করেন। আর. সি. তার মায়ের কোলে বসেই তার পিতাকে লেখা চিঠির নীচের দিকে টাইপ-মেশিনের x’s and o’s – এ দু’টো ঘাট চেপে তার প্রথম টাইপ করেন যা ইংরেজিতে “কিসেস ও হাগস” বুঝায়। প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে তার উচ্চ বিদ্যালয়ের বছরগুলোতে আর. সি. টাইপ-রাইটারের চেয়েও ক্রীড়া ক্ষেত্রে বেশী সময় ব্যয় করেন। তিনি পিটসবার্গের উত্তরে অবস্থিত, ওয়েস্টমিনস্টার কলেজের হয়ে ক্রীড়া-ক্ষেত্রে বৃত্তি লাভ করেন। আর. সি. কলেজে পড়াশুনা কালেও বিশ্বাসান্তরীত ছিলেন না, কিন্তু কলেজের প্রথম বর্ষে ভতিৃর শুরুতেই তাকে খ্রিষ্টের দিকে চালিত করা হয়।
আর. সি. যখন কলেজ ত্যাগ করেন, তখন তিনি কেবল বিশ্বাসান্তরীতই ব্যক্তি ছিলেন না, কিন্তু ঈশ্বর সম্পর্কে মতবাদের প্রতি তার “দ্বিতীয় বিশ্বাসান্তর।” তিনি এই অভিজ্ঞতার বিষয়ে দ্যা হলিনেস অফ গড পুস্তকের প্রারম্ভিক পৃষ্ঠায় লিখেছেন। ১৯৬০ সালের ১১ই জুন, আর. সি. তার শৈশবকালীন প্রিয়তমা ভিস্তাকে বিয়ে করেন। তিনি সেই সময় মাত্র কলেজ পাশ করেছিলেন এবং আর. সি’র কলেজ শেষ করতে আরও একবছর বাকী ছিল। প্রথম দেখাতেই তিনি তার প্রেমে পড়ে যান, তখন ভিস্তা মাত্র দ্বিতীয় গ্রেডে আর আর. সি. প্রথম গ্রেডে ছিলেন। আর. সি. ও ভিস্তাকে সবসময় একেবারে কাছাকাছি দেখা যেত।
কলেজ শেষে, আর. সি. পিটসবার্গ থিওলজীক্যাল সেমিনারিতে যান, যেখানে তিনি জন গার্স্টনারের পরামর্শের অধীনে ছিলেন। আর. সি. একবার বলেছেন, “গার্স্টনার না থাকলে আমি হয়তো হারিয়ে যেতাম।” সেমিনারি থেকে ডিগ্রি পাওয়ার আগেই আর. সি. পেনসিলভ্যানিয়াস্থ প্রেসবিটেরিয়্যান চার্চ ইন লিনদোরায় তার প্রথম পালকীয় কাজের দায়িত্ব-ভার গ্রহণ করেন, যে চার্চের বেশীরভাগ সদ্স্যই ছিলেন নীল-রঙের হাঙ্গেরীয় অভিবাসী, যাদের বেশীরভাগই আরমকো স্টিল ওয়ার্কসের কর্মী ছিলেন। সেমিনারি জীবনের পরে, তিনি ফ্রি ইউনিভার্সিটি অফ আমস্টারড্যামে জি. সি. বারকোভারের অধীনে ডক্টরেট লেবেলে অধ্যয়ন শুরু করেন। তিনি নিজে নিজে বক্তৃতা শুনতে শুনতে এবং টেক্সটবুক পড়তে পড়তেই ডাচ ভাষা রপ্ত করেন। ২০১৬ সালে, তার মেয়ে, শ্যারি ডাচ ভাষায় লেখা উপন্যাস পেরি মেসন খণ্ড তাকে উপহার দেন, এবং আবার ডাচ ভাষা শিখার সুযোগ বেশ উপভোগ করেন।
নেদারল্যান্ডে এক বছর থাকার পর আর. সি. আমেরিকায় ফিরে আসেন। ১৯৬৫ সালের ১৮ই জুলাই, ইউনাইটেড প্রেসবিটেরিয়্যান চার্চ ইন দ্যা ইউনাইটেড স্ট্যাটস অফ আমেরিকা (ইউপিসিইউএসএ) সম্প্রদায় ভুক্ত, প্ল্যাজেন্ট হিলস ইউনাইটেড প্রেসবিটেরিয়্যান চার্চে তিনি অভিষিক্ত হন। পরবর্তীতে তিনি তার পালকীয় অভিষেকের প্রমাণ-পত্র প্রেসবিটেরিয়্রান চার্চেইন আমেরিকা (পিসিএ) সম্প্রদায়ে স্থানান্তর করেন। তারপর তিনি ওয়েস্টমিনস্টার কলেজ (১৯৬৫-৬৬), গর্ডন কলেজ (১৯৬৬-৬৮), এবং সে সময়ে ফিলাড্যালফিয়াস্থ টেম্পল ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসে অবস্থিত কনওয়েল থিওলজিক্যাল কলেজে, পর পর তিন বার শিক্ষকতার পদে কাজ করেন। কনওয়েলে থাকাকালীন, ফিলাড্যালফিয়ার ঠিক বাইরে তিনি অরিল্যান্ড প্রেসবিটেরিয়্যান চার্চের সান্ডে স্কুল ক্লাসে শিক্ষা দিতেন। এরপর, আর. সি. দু’ বছর ওয়াইও-এর সিনসিন্ন্যাতিতে কলেজ হিল প্রেসবিটেরিয়্যান চার্চে পালকীয় কাজ করেন।
১৯৭১ সালে, আর. সি. পশ্চিম পেনসিলভ্যানিয়ার পাহাড়ে অবস্থিত স্ট্যালসটাউনে লিগনিয়্যার ভ্যালি স্টাডি সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৮৪ সালে এই পরিচর্যা-কাজ অরল্যান্ডোতে স্থানান্তরিত হয়, যেখান থেকে এটি প্রকাশনা, সম্প্রচার, এবং শিক্ষাদানের মধ্য দিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক শ্রোতাদের সেবা করেছে। লিগনিয়্যার ভ্যালিতে থাকাকালীন, ১৯৭৭ সালে এটি টেবলটকের প্রথম সংষ্করণ তৈরী করে। দৈনন্দিন ভক্তিমূলক ম্যাগাজিনের বর্তমান বিতরণ সংখ্যা হলো ১০০,০০০ কপি, যার আনুমানিক পাঠক সংখ্যা ২৫০,০০০-এর বেশী। লিগনিয়্যার দ্যা আর. সি. স্প্রৌল স্টাডি আওয়ার নামে রেডিও পোগ্রাম ১৯৮২ সালে শুরু করে, তারপর রিনিউইং ইয়ুর মাইন্ড নামে দৈনন্দিন পোগ্রাম ১৯৯৪ সালে শুরু করে, যা লক্ষ লক্ষ লোকের কাছে পৌঁছেছে।
১৯৭১ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত, লিগনিয়্যার আয়োজিত দেশব্যাপী বার্ষিক জাতীয় সন্মেলন, আঞ্চলিক সন্মেলন, আন্তর্জাতিক সন্মেলন, এবং শিক্ষা সফরগুলোতে; প্রকাশিত শিক্ষণ সিরিজ, বই-পুস্তক, ও অনান্য উপকরণসমুহে; এবং একটি ওয়েবসাইট, ব্লগ, রেফনেট, ও লিগনিয়্যার অ্যাপের পদযাত্রায় আর. সি. কর্ণধার ছিলেন। যে কোন সপ্তাহের কথা ধরি না কেন, এ পরিচর্যা-কাজ বিশ্ব জুড়ে বিশ লক্ষেরও বেশী লোকের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে। লিগনিয়্যার মিনিস্ট্রিজের পরবর্তী পরিকল্পনা অংশ হিসেবে, এর বোর্ড লিগনিয়্যার টিচিং ফেলোসের ঘোষণা দেন, যাতে এখন যুক্ত রয়েছেন ডঃ সিনক্ল্যায়ার ফার্গুসন, ডঃ ডব্লিউ. রবার্ট গডফ্রে, ডঃ স্টিফেন জে. নিখোলস, ডঃ বার্ক প্যারসনস, এবং ডঃ ড্যারেক ডব্লিউ. এইচ. থমাস। আর লিগনিয়্যার মিনিস্ট্রিজের প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে ক্রিস লারসন কাজ করে আছেন।
রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ নাগরিক হিসেবে তার অবস্থান থেকে, আর. সি. ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল অফ বিব্লিক্যাল ইনএ্যারেন্সি, ইভানজেলিজম এক্সপ্লোশন, প্রিজন ফেলোশিপ, এবং সার্ভ ইন্টারন্যাশনাল-এর বোর্ডের মধ্য দিয়ে সেবা করেন। ১৯৮০ সালে, আর. সি. রিফর্মড থিওলজিক্যাল সেমিনারিতে ধর্মতত্ত্ব ও পক্ষ-সমর্থনবিদ্যার অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ও ভিস্তা প্রতি বছরে কয়েক মাস করে মিসিসিপির জ্যাকসনে বেড়াতে যেতেন, এবং পূর্ণ-সময়ের কাজের চাপ নিয়ে মনোনিবেশ সহকারে তিনি পড়াতেন। ১৯৮৭ সালে, তিনি সেন্ট্র্যাল ফ্লোরিডায় বসবাস করার পরে, আরটিএস এর অরল্যান্ডো ক্যাম্পাস খোলেন। আর. সি. ১৯৮৭-১৯৯৫ পর্যন্ত জন ডায়ার ট্রিম্বল সিনিয়র চেয়ার অফ সিস্টেম্যাটিক থিওলজি প্রফেসর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে তিনি ১৯৯৫-২০০৪ পর্যন্ত, ফ্লোরিডার লডারড্যালে অবস্থিত নক্স থিওলজিক্যাল সেমিনারিতে সিস্টেম্যাটিক থিওলজি এন্ড এ্যাপোলজেটিক্সের বিশিষ্ট অধ্যাপক হিসাবে সেবা দান করেন।
আর. সি. আবারও পালকীয় কাজে ফিরে এসেছিলেন। যেমন তিনি স্মরণ করেছেন, “১৯৯৭ সালে, ঈশ্বর এমন কিছু করেছেন যা আমি কখনই প্রত্যাশা করিনি।” তা ছিল ফ্লোরিডার স্যানফোর্ডে সেন্ট এন্ড্রুস চ্যাপেল প্রতিষ্ঠা করা। তার মৃত্যুর সময়ে, আর. সি. সেন্ট এন্ড্রুস-এর সহ-পালক হিসেবে বার্ক প্যারসনস-এর সাথে ছিলেন। তিনি ২০১৭ সালের নভেম্বরের ২৬ তারিখে, ইব্রীয় ২:১-৪ পদের উপর “মহৎ এই পরিত্রাণ” শিরোণামে তার শেষ প্রচার-বাণী প্রচার করেন।
মৃত্যুর সময়ে, আর. সি. স্প্রৌল ২০১১ সালে, তারই প্রতিষ্ঠা করা রিফর্মেশন বাইবেল কলেজের উপাচার্য ছিলেন। আর. সি. প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসেবে এতে সেবা প্রদান করেন, কলেজের নামকরণ করেন, এর পাঠক্রম প্রস্তুত করেন, এবং সংষ্কার-পন্থি প্রাচিন ঐতিহ্যে ঈশ্বর ও তাঁর পবিত্রতা বিষয়ক জ্ঞানে শিক্ষার্থীদের শিক্ষিত করার লক্ষ্যে এর মিশন নির্ধারণ করেন। লিগনিয়্যার প্রশাসনিক ভবনে তার অফিসের জানালা থেকে, আর. সি. ডান দিকে দেখতে পারতেন এবং কলেজটি দেখতে পারতেন; আর বাম দিকে দেখলে চার্চ দেখতে পেতেন।
আর. সি. ১৯৭৩ সালে তার প্রথম বই: দ্যা সিম্বল: এ্যান এক্সপোজিসন অফ দ্যা এ্যাপোসলস ক্রীড প্রকাশ করেন। তিনি এটা উৎসর্গ করে লেখেন: “ভিস্তাকে: রোমানদের কাছে, এক পরজাতীয় দেবী, আমার কাছে, এক ঈশ্বর-ভক্ত স্ত্রী।” তার প্রথম বইটি, ধর্মতত্ত্ববিদ হিসেবে তার সামনের দিককার কাজকে তাৎপর্য-মণ্ডিত করে, এবং তার প্রথম বইয়ের উৎসর্গের কথা তার মূল প্রকৃত রচনাশৈলী তুলে ধরে। তার মৃত্যুর সময় নাগাদ, তার লেখার হিসেবে একশতেরও বেশী বই ছিল। এর মধ্যে শিশুদের বইপুস্তক, একটি উপন্যাস, ওয়েস্টমিনস্টার কনফেশন অফ ফেইথের তিন-খন্ডের বিস্তারিত এক টীকা, বাইবেলের কয়েকটি পুস্তকের উপর টীকা, এবং মতবাদ ও খ্রিষ্টীয় জীবনের প্রায় প্রত্যেকটি বিষয়ের উপর বই-পুস্তক রয়েছে। তিনি ১৯৮৪ সালে ক্ল্যাসিক্যাল এ্যাপোলজেটিকস প্রন্থের সহ-লেখক, এবং ১৯৮৬ সালে চোজেন বাই গড গ্রন্থ লিখেছেন। ১৯৮৫ সালে, তিনি একবিংশ শতাব্দির উচ্চমানের গ্রন্থসমূহের মধ্যে বিবেচিত দ্যা হলিন্যাস অফ গড গ্রন্থ প্রকাশ করেন। আর. সি. রিফর্মেশন স্টাডি বাইবেলের সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি দুই ডজনেরও বেশী সংগীত লেখেন। তার বন্ধু ও সংগীত-রচয়িতা জেফ লিপ্পেনকটের সাথে মিলে দু’টো সিডি প্রকাশ করেন, সেগুলো হচ্ছে গ্লোরি টু দ্যা হলি ওয়ান (২০১৫) এবং সেন্টস অফ যাইয়োন (২০১৭)।
আর. সি-র লেখা সংগীতগুলো ছিল সংগীতের প্রতি তার আজীবন লালিত প্রেমের এক স্বাভাবিক প্রকাশ। ভিস্তাকে সাথে নিয়ে, তিনি প্ল্যাসেন্ট হিলস ইউনাইটেড প্রেসবিটেয়্যান চার্চের কয়ার-দলে গান করেছেন এবং স্কুলের কয়ারেও গেয়েছেন। আর. সি. আবার স্কুলের কোয়ার্টেটে নীচু-স্বরে গেয়েছেন। তিনি পিয়ানোবাদক ছিলেন, এবং পরবর্তীতে জীবনে, তিনি সদ্য প্রতিষ্ঠিত স্যান্ট এন্ড্রুস কনজারভ্যাটরি অফ মিউজিকে থেকে শিক্ষা নিয়ে বেহেলা বাজাতেন। তিনি ছবিও আঁকতেন। তিনি এক উৎসুক অথচ সফল গল্ফ খেলোয়াড় ছিলেন। তিনি শিকার করা, ধাঁধা মেলানো, এবং পড়াশুনা, বিশেষভাবে জীবনী-গ্রন্থ পড়া উপভোপ করতেন।
এক পূর্ণাঙ্গ শিক্ষক, আর. সি. মণ্ডলীর সাধারণ লোকদেরকে মতবাদ শিক্ষা দিতে ভালবাসতেন এবং এরজন্যই তিনি বেঁচে ছিলেন। তিনি খুব রসিক ছিলেন, তার গভীর হাস্যরস যেন সর্বদাই প্রস্তুত থাকতো। আর. সি-র সাথে কথপোকথন গভীর ধর্মতাত্ত্বিক সম্পৃক্ততা থেকে গল্ফ-খেলা (ক্রীড়ার চেয়েও বেশী), খেলা থেকে রসিকতা পর্যন্ত অনায়াসে গড়াতো। তিনি মনের নতুনীকরণ, হৃদয়ের রূপান্তর, এবং সুসমাচারের ফলে জীবন পরিবর্তন দেখতে প্রত্যাশা করতেন। যে কোন কিছুকে পরিষ্কার করে তুলে ধরার এক অসাধারণ গুণ তার ছিল। তিনি তার শ্রোতাদের পরিভাষাগত দুর্বোধ্য শব্দ দিয়ে আতংকিত করেন নি, আবার পৃষ্ঠপোষকতার ভানও করেন নি। তিনি স্পষ্টভাবে এবং অত্যাবশ্যকীয় জরুরী হিসেবে গভীর প্রসঙ্গগুলো, মূল-সার ও গুরুত্বপূর্ণ প্রসঙ্গগুলো শিক্ষা দিয়েছেন। তিনি তার প্রচার-বিদ্যা ক্লাশের শিক্ষার্থীদের শাস্ত্রাংসে নাটক খুঁজে বের করতে এবং সেই নাটক প্রচার করতে শিক্ষা দিতেন।
আর. সি. স্প্রৌল প্রায়ই বাইবেলের ঈশ্বরের সাথে তার মুখোমুখি হওয়ার প্রথম অভিজ্ঞতার কথা স্মরণ করতেন। নূতন খ্রিষ্টান এবং কলেজে নবীন হিসেবে, তিনি বাইবেল রপ্ত করেছিলেন। তার পড়া থেকে একটি বিষয় উঠে এসেছে: ঈশ্বর হচ্ছেন উত্তম ঈশ্বর যিনি রক্ষা করতেই খেলেন। গীতসংহীতা, উষের কাহিনী, আদিপুস্তক ১৫:১৭, মেরির প্রশংসা-গান, লূক ১৬:১৬-১৭, এবং অবশ্যই, যিশাইয় ৬- এই শাস্ত্রাংসগুলোর নাটকীয়তা প্রথম পাঠের মুহুর্ত থেকেই আর. সি-কে বিমোহিত করেছিল।
আর. সি. আমাদেরকে শিখিয়েছেন: “ঈশ্বর পবিত্র, এবং আমরা নই।” এর মাঝখানে হচ্ছেন ঈশ্বর-মানব যিশু খ্রিষ্ট এবং তাঁর সিদ্ধ বাধ্যতার কাজ এবং ক্রুশের উপর তাঁর প্রায়শ্চিত্বের মৃত্যু। এটাই ছিল আর. সি. স্প্রৌলের (১৯৩৯-২০১৭) এর বার্তা এবং আমাদের জন্য উত্তরাধিকার।