


নূতন নিয়মের মহিমা
27-03-2025


মৃত্যু সওদাকারী অক্ষর
03-04-2025পুরাতন নিয়মের মহিমা


“কিন্তু মৃত্যুর যে পরিচর্যা-পদ প্রস্তরে লিখিত ও ক্ষোদিত, তাহা যদি এমন তেজযুক্ত হইয়া আসিল যে, ইস্রায়েল-সন্তানগণ মোশির মুখের তেজ প্রযুক্ত তাঁহার মুখের দিকে একদৃষ্টে চাহিতে পারিল না, সেই তেজ ত লোপ পাইতেছিল তবে – কেন আত্মার পরিচর্যা-পদ বরং আরও তেজযুক্ত হইবে না ?”
সংষ্কারের উত্তরাধিকারীগণ শাস্ত্রের প্রাঞ্জলতা এবং সুস্পষ্টতা স্বীকার করেন। এই মতবাদ বলে যে, পরিত্রাণের পরিকল্পনা এবং পবিত্রতার জন্য ঈশ্বর তাঁর লোকদের কাছে থেকে যা চান তা পবিত্র বাইবেল এত পরিষ্কার যে এমনকি একজন ছোট শিশুও তা বুঝতে পারে। যা‡nvক, এই মতবাদ আমাদেরকে আরও বলে যে, শাস্ত্রের মধ্যে সমস্ত কিছুই সমানভাবে পরিষ্কার। নূতন নিয়মের চেয়ে পুরাতন নিয়ম কম গুরুত্বপূর্ণ শাস্ত্রের এমন শিক্ষা এবং পুরাতন নিয়মের ব্যবস্থা পরিত্রাণের ইতিহাসে কিভাবে কাজ করেছে এটা বুঝাটা অপেক্ষাকৃত একটা কঠিন বিষয়।
২ করিন্থীয় ৩:১-৬ পদে আমরা যেমন দেখি, পৌল পুরাতন নিয়ম মোশির আইন সমন্ধে অনেক কিছু বলেছেন যা আপাত দৃষ্টিতে নেতিবাচক বলে মনে হয়। যেমন মোশির ব্যবস্থায় অক্ষর “বধ” (৬ পদ) করে। আজকের শাস্ত্রাংসে, প্রেরিত পৌল পুরাতন নিয়মকে “মৃত্যুর পরিচর্যা” (৭ পদ) হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন। এটি প্রশ্নের জন্ম দেয়, কেননা পৌলও ব্যবস্থাকে উত্তম বলে আখ্যায়িত করেছেন। উদাহরণস্বরুপ, তিনি পক্ষান্তরে ব্যবস্থাকে খ্রীষ্টিয় জীবন যাপনের দিক নির্দশনা হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন (ইফিষীয় ৬:১-৩)। উপরন্তু, আজকের শাস্ত্রাংসে প্রেরিত পৌল বলেছেন যে পুরাতন নিয়ম মহিমার সঙ্গে আগমন করে (৭ পদ)। তাই, এখানে পৌলের শিক্ষায় আমাদের জন্য কি বৈপরীত্য আছে ? পুরাতন নিয়ম কি উত্তরাধিকারসুত্রেই মন্দ ছিল ? যে সমস্ত লোকেরা পুরাতন নিয়মের সময় বসবাস করতেন, যদিও পুরাতন নিয়ম বধ করে, তারা কি আদৌ পরিত্রাণ পেয়েছেন ?
যখন আমরা পরিত্রাণের বিষয়ে ঈশ্বরের পরিকল্পনার একতাকে এবং পরিত্রাণের ইতিহাসে পুরাতন নিয়মের ভুমিকাকে বুঝতে পারি তখন এই বিষয়গুলোকে সমন্বয় করা খুব সহজ হয়ে যায়। পুরাতন নিয়মের সাধুরা পুরাতন নিয়মের দ্বারা মুক্তি পান নি কিন্তু এর মধ্যে খ্রীষ্টের দ্বারা এবং নূতন নিয়মের মধ্যদিয়ে, যখন তারা জীবিত ছিল তখনও যা ছিল ভবিষৎ। পুরাতন নিয়মের মৃত্যুজনক প্রকৃতি নিয়ে এবং পুরাতন নিয়মের বিশ্বাসীদের নিয়ে জন কেলভিনের একটি সাহায্যকারী মন্তব্য রয়েছে। তিনি লিখেন, He writes, “পৌল এখানে ব্যবস্থার একটি বিশেষ দিক নিয়ে আলোচনা করেন; কেননা যদিও ঈশ্বর তখন (পুরাতন নিয়মের সময়) তাঁর আত্না দ্বারা কাজ করেছেন, তথাপি তিনি এটা মোশির মিনিষ্ট্রি থেকে নেননি, কিন্তু খ্রীষ্টের অনুগ্রহ থেকে নিয়েছেন।” পুরাতন নিয়মের সাধুরা নূতন নিয়মের যীশুর মিনিষ্ট্রি থেকে লাভবান হয়েছেন যদিও তারা নুতন নিয়মের যুগে জীবিত ছিলেন না।
পুরাতন নিয়মের নিজস্ব একটি বিশেষ মহিমা ছিল, কিন্তু এর অর্থ এই ছিল না যে যার মধ্যদিয়ে ঈশ্বর এই জগতে পরিত্রাণ নিয়ে এসেছেন। সদাপ্রভুর চরিত্র প্রকাশ করা এবং লোকদেরকে ত্রাণকর্তার প্রয়োজনীয়তার দিকে ইংগিত করাই ছিল এর মহিমা (গালাতীয় ৩:১৫-২৯)। পুরাতন নিয়মের সাধুগণ মুক্তি পেয়েছেন, পুরাতন নিয়ম এবং ব্যবস্থা দ্বারা নয় কিন্তু ঈশ্বরের দয়ার উপর বিশ্বাস করার দ্বারা। যেকেহ পরিত্রাণের উপায় হিসাবে ব্যবস্থার দিকে দৃষ্টিপাত কর এবং এটা পালনের মধ্যদিয়ে স্বর্গ আশা করে তারাই দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন (রোমীয় ৯:৩০-৩৩)।
ঈশ্বরের মুখপুরাতন নিয়ম এবং পুরাতন নিয়মের ব্যবস্থার জন্য আমাদেরকে কৃতজ্ঞ হওয়া উচিত। এটা ছাড়া, পাপ সমন্ধে এবং ঈশ্বরের সহিত পুনর্মিলনের জন্য বিকল্প প্রায়শ্চিত সাধনের মধ্যদিয়ে যা দরকার ছিল, সে সমন্ধে আমাদের খুবই অল্প ধারণা থাকতো। এক যে উপায়ে আমরা আমাদের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারি আর তা হলো নূতন নিয়মকে সর্তকতার সহিত নেওয়া, বিস্তারিতভাবে এটা অধ্যয়ণ করা, কেননা উভয় নিয়মই আমাদের জন্য ঈশ্বরের বাক্য।
এই প্রবন্ধটি মূলতঃ লিগনিয়্যার মিনিস্ট্রিজ ব্লগে প্রকাশিত হয়েছিল।