


আবরণ সরানো
25-03-2025


পুরাতন নিয়মের মহিমা
01-04-2025নূতন নিয়মের মহিমা


“কারণ যাহা তেজযুক্ত করা হইয়াছিল, তাহা এই বিষয়ে সেই অতিরিক্ত তেজ প্রযুক্ত তেজযুক্ত হয় নাই। কেননা যাহা লোপ পাইতেছে, তাহা যদি তেজযুক্ত হইয়া থাকে, তবে যাহা স্থায়ী, তাহা কত অধিক তেজযুক্ত” (১০-১১ পদ)।
ঈশ্বর এবং ইস্রায়েল জাতির মধ্যে পুরাতন নিয়মে মহিমার উপস্থিতি ছিল। শাস্ত্র বিভিন্ন উপায়ে প্রমান দেয়। উদাহরণস্বরূপ, পুরাতন নিয়মে ঈশ্বর যখনই নেমে এসেছেন মেঘ গর্জন, বিদ্যুৎ, পর্বতের উপর নিবির মেঘ, এবং অতিশয় উচ্চরবে তূরীধ্বনি তাঁর মহিমান্বিত উপস্থিতিকে তাৎপর্যমণ্ডিত করেছে। (যাত্রাপুস্তক ১৯:১৬)। ২ করিন্থীয় ৩, অধ্যায়ে পৌল মোশির উজ্জল চেহেরা ঢাকার কাহিনীর দিকে দৃষ্টি দিয়েছেন, যা সদাপ্রভুর সাথে তার সাক্ষাতের পর ঈশ্বরের মহিমাকে, পুরাতন নিয়মের মহিমার প্রমাণকে প্রতিফলিত করেছে (যাত্রাপুস্তক ৩৪:২৯-৩৫)।
পুরাতন নিয়মের উপর নূতন নিয়মের প্রাধান্যের বিষয়ে যুক্তি দিয়ে, পুরাতন নিয়মের সাথেও যে মহিমা ছিল তা কিন্তু প্রেরিতরা অস্বীকার করেন না। বস্তুত, তিনি ২ করিন্থীয় ৩:৯ পদে সরাসরি বলেন যে, দোষি সাব্যস্ত করার সময়ও- পুরাতন নিয়মের সময়ও মহিমার উপস্থিতি ছিল। কিন্তু যদি এটা পুরাতন নিয়মের ক্ষেত্রে সত্য হয়ে থাকে তবে এটা নূতন নিয়মের ক্ষেত্রে কতনা আরও বেশী সত্য হবে তাই না (৯ পদ)? ৯ পদে এখানে, প্রেরিত পৌল এই নূতন নিয়মকে “ধার্মিকতার মিনিষ্ট্রি” হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন। ধার্মিকতা সমন্ধে তিনি কি বলেছেন তা তিনি এই পত্রের শেষের দিকে দিয়েছেন (৫:২১ পদ দেখুন), প্রেরিত পৌল তিনি ময়নাতদন্ত আকারে অথবা বিচারিক ভাবে চিন্তা করছেন। অর্থাৎ পৌল ধার্মিক পরিগনিত হওয়ার ঘোষনার দিকে দৃষ্টি দিচ্ছেন অর্থাৎ আমাদের উপরে খ্রীষ্টের নিঁখুত ধার্মিকতার ভিত্তির দিকে দৃষ্টি দিচ্ছেন, অর্থাৎ আমরা যখন পরিত্রাণের জন্য কেবলমাত্র খ্রীষ্টের উপর নির্ভর করি খ্রীষ্টের ধার্মিকতার উপর ভিত্তি করে আমাদেরকেও ধার্মিক গণনা করা হয়। নূতন নিয়ম হলো ধার্মিকতার মিনিষ্ট্রি কারণ অনন্ত জীবনের অধিকারী হওয়ার জন্য সদাপ্রভু ঈশ্বর আমাদের কাছ থেকে যে ধার্মিকতা দাবী করেন তা এই মিনিষ্ট্রি যীশুর নিখুঁত জীবন, প্রায়শ্চিত্বসাধক মৃত্যু, এবং প্রামানিক পুনরুত্থানের মধ্যদিয়ে আমাদেরকে দান করে (রোমীয় ৩:২১-৩১; ৪:১৬-২৫)। পুরাতন নিয়ম পাপীদেরকে “অধার্মিক” হিসাবে দোষী সাব্যস্ত করে, কেননা আমরা নিখুঁতভাবে এই দাবী পালন করতে পারি নাই, কিন্তু নূতন নিয়ম পাপীদেরকে যারা যীশুতে বিশ্বাস রাখে তাদেরকে “ধার্মিক” বলে আখ্যায়িত করে কারণ যীশু আমাদের স্থলে ঈশ্বরের দাবী পুরণ করেছেন। এভাবে, নূতন নিয়ম পুরাতন নিয়মের চেয়ে আরও বেশী মহিমান্বিত। এটা পরিষ্কারভাবে আমাদের সৃষ্টিকর্তার ন্যয়পরায়নতা এবং দয়া প্রকাশ করে।
পুরাতন নিয়মের মহিমা থাকলেও, নূতন নিয়মের মহিমা এত বেশী মহিমান্বিত ছিল যে, এর সাথে তুলনা করলে পুরাতন নিয়মকে মহিমাহীন মনে হয় (২ করিন্থীয় ৩:১০)। নুতন নিয়মের মহিমা পুরাতন নিয়ম থেকে এত বেশী যে আমরা সত্যিকারে একই নিশ্বাসে বলতে পারি না যে, প্রত্যেকেরই মহিমা আছে। এটা আমাদেরকে যোহন ১:১৭ পদের মতো শাস্ত্রাংসগুলোকে বুঝতে সাহায্য করে, যা বলে, “ব্যবস্থা মোশি দ্বারা দত্ত হইয়াছিল, অনুগ্রহ ও সত্য যীশু খ্রীষ্ট দ্বারা উপস্থিত হইয়াছে।” যোহন পুরাতন নিয়মের অধীনে সত্য এবং অনুগ্রহের উপস্থিতিকে অস্বীকার করছেন না; কিন্তু এটা কেবলমাত্র খ্রীষ্টেতে আরও বেশী পরিষ্কারভাবে দেখা যায় যা আমরা প্রকৃত পক্ষে তাঁর সাথে পুরাতন নিয়মকে তুলনা করতে পারি না। তাই যখন পুরাতন নিয়মের সাথে নূতন নিয়মের মহিমাকে রাখা হয় তখন এমনই হয়।
ঈশ্বরের মুখমেথিউ হেনরী মন্তব্য করেন, “যখন সূর্য উঠে এবং এর তেজ ছড়িয়ে দেয়, তখন যেমন প্রদীপের আলো হারিয়ে যায় বা বিবেচনা করা হয় না, ঠিক তেমনি নূতন নিয়মের মহিমার সাথে তুলনা করলে পুরাতন নিয়মের কোন মহিমা থাকে না।” নূতন নিয়মের মহান মহিমার অধীনে থাকার কারণে আমরা আমদের যে সুযোগ আছে তা খুব সহজেই ভুলে যেতে পারি, কিন্তু আমরা যেন এটাকে হালকাভাবে না নিই। পুরাতন নিয়মের সাধুরা ঈশ্বরের যে মহিমা তারা উপভোগ করেছেন তার চেয়ে আমাদের কাছে খ্রীষ্টেতে ঈশ্বরের মহিমা সমন্ধে আরও বেশী মহান ধারণা রয়েছে, তাই আসুন আমরা কৃতজ্ঞ হই।
এই প্রবন্ধটি মূলতঃ লিগনিয়্যার মিনিস্ট্রিজ ব্লগে প্রকাশিত হয়েছিল।