


মহিমা থেকে মহিমায়
21-03-2025


নূতন নিয়মের মহিমা
27-03-2025আবরণ সরানো


“কিন্তু হৃদয় যখন প্রভুর প্রতি ফিরে, তখন আবরণ উঠাইয়া ফেলা হয়” (১৬ পদ).
পুরাতন নিয়ম যা মোশির মধ্যদিয়ে দেওয়া হয়েছিল, তার একটা নিজস্ব মহিমা আছে, কিন্তু এটা চুড়ুন্ত মহিমা নয়। ২ করিন্থীয় ৩:৭-১১ পদে এটাই ছিল পৌলের মুল বিষয়। পক্ষান্তরে, নূতন নিয়মের মহিমা হলো চিরস্থায়ী। এটা কখনই শেষ হবে না (১১ পদ)। এই কারণেই আজেকের শাস্ত্রাংশে পৌল বলেন, এই নূতন নিয়মের এবং এর সমস্ত মহিমা ঘোষনার বিষয়ে তিনি খুবই ষ্পষ্ট ( ১২ পদ)।
কেউ জিজ্ঞাসা করতে পারেন যে, পুরাতন নিয়ম ছিল ক্ষণস্থায়ী এবং নূতন নিয়ম যে আরও বেশী মহান, প্রেরিত কোথা থেকে এই ধারণাগুলো পাচ্ছেন। প্রমান পাওয়া যায়, ভ্রান্ত প্রেরিতেরা যারা করিন্থীয় মণ্ডলীতে সমস্যা সৃষ্টি করছিলেন তারা এই প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেছেন, অথবা কমপক্ষে পৌল এই অভিযোগকে তার শিক্ষায় উল্লেখ করেছেন। তাই, পৌল তার শিক্ষা যে পুরাতন নিয়মের মহিমা ম্লান হওয়ার বিষয়ে তার জন্য তিনি পুরাতন নিয়মের উদ্ধোধনের একটি পর্ব থেকে প্রদর্শনের দিকে দিকে দৃষ্টি দিয়েছেন, যে পুরাতন নিয়ম নিজেই শুরু থেকে এটা প্রকাশ করেছে। এই বর্ণনাটি যাত্রাপুস্তক ৩৪:২৯-৩৫ পদে পাওয়া যায় যেখানে আমরা পাঠ করি যে মোশি যখনই ঈশ্বরের সম্মুখে উপস্থিত হতেন তার মুখমণ্ডল ঈশ্বরের মহিমায় আলোকিত হতো। এই কারণে, মোশি যখন সদাপ্রভুর সাথে কথা বলে ইস্রায়েল জাতির কাছে ফিরে আসতেন, পুরাতন নিয়মের সাথে যুক্ত ঈশ্বরের পরিপূর্ণ মহিমা দর্শন থেকে বিরত রাখার জন্য তিনি তার মুখমণ্ডল ঢেকে রাখতেন।
পৌল বলেন যে, ইস্রায়েল জাতিকে পুরাতন নিয়মের মহিমা দেখা থেকে সরিয়ে রাখার জন্য এটা করতেন কারণ এই মহিমা চলে যাচ্ছিল। পুরাতন নিয়মের মহিমা ঘোষনা করার জন্য মোশি এত ষ্পষ্ট ছিল না, কেননা যা পরিশেষে শেষ হয়ে যাবে তিনি তা ঘোষনা করতে পারেন না (২ করিন্থীয় ৩:১৩)। এটা এরুপ হতে হয়েছিল কারণ লোকেদের হৃদয় খুব কঠিন ছিল এবং যা অবশেষে ম্লান হয়ে যাবে তারা এমন একটি মহিমাকে সহ্য করতে পারতো না (১৪ পদ)। পুরাতন নিয়মের লোকদের-যিহদীদের এই কঠিনতা- যেহেতু সামগ্রিকভাবে এটা চলমান, যদিও অনেক যিহুদীদের ব্যক্তিগতভাবে হৃদয় কঠিন ছিল না এবং তারা খ্রীষ্টেতে বিশ্বাস করতো। তাদের হৃদয়ের কঠিনতা একটি আবরনের মতো যখনই পুরাতন নিয়মের শাস্ত্রগুলো পাঠ করা হয় তা তাদের কাছ থেকে এখন নূতন নিয়মের মহিমা আড়াল করে রাখে, ঠিক যেমন সিনয় পর্বতে মোশির আবরণ ইস্রায়েল জাতির কাছ থেকে পুরাতন নিয়মের মহিমাকে আড়াল করেছিল (১৪-১৫ পদ)। তাদের একমাত্র আশা ছিল এই পর্দাকে সরানোর মধ্যে যখন এটা হয় তখন তারা যীশু খ্রীষ্টেতে বিশ্বাস স্থাপন করে (১৬ পদ)।
পৌলের দৃঢ় যুক্তি ভ্রান্ত প্রেরিতদের পুরাতন নিয়মের অস্থায়ী প্রকৃতিকে বুঝতে ব্যর্থ হওয়াকে সমালোচনা করে, এবং পুরাতন নিয়মের প্রত্যাদেশকে সত্যিকারে বুঝার জন্য খ্রীষ্টেতে বিশ্বাস এবং পুনজন্মের প্রয়োজনীয়তার দিকে ইংগিত করে। যতক্ষণ না লোকেরা যীশুতে বিশ্বাস করে, তারা ঈশ্বরের বাক্য সম্পূর্ণভাবে বুঝতে পারবে না।
ঈশ্বরের মুখহিপ্প এর আগষ্টিন আজকের শাস্ত্রাংশের বিষয়ে মন্তব্য করেছেন যে, “খ্রীষ্টের সাথে যে বিষয় শেষ হয়ে গেছে তা পুরাতন নিয়ম নয় কিন্তু আচ্ছাদনকারী আবরণ, যেন খ্রীষ্টের মধ্যদিয়ে এটাকে বুঝা যায়।” খ্রীষ্টেতে, আমরা পুরাতন নিয়মকে দূরে সরিয়ে দিই না, কিন্তু আমরা সম্পূর্ণ তাৎপর্যের সহিত এটাকে বুঝতে শুরু করি। আমরা যদি খ্রীষ্টের দৃষ্টিতে পুরাতন নিয়মকে পাঠ না করি, আমরা ঈশ্বরের বাক্যকে ভুল বুঝতে পারি।
এই প্রবন্ধটি মূলতঃ লিগনিয়্যার মিনিস্ট্রিজ ব্লগে প্রকাশিত হয়েছিল।