


আরাধনায় ঈশ্বরের গৌরব
13-03-2025


আবরণ সরানো
25-03-2025মহিমা থেকে মহিমায়


“আর প্রভুই সেই আত্মা; এবং যেখানে প্রভুর আত্মা, সেইখানে স্বাধীনতা। কিন্তু আমরা সকলে অনাবৃত মুখে প্রভুর তেজ দর্পণের ন্যায় প্রতিফলিত করিতে করিতে তেজ হইতে তেজ পর্যন্ত যেমন প্রভু হইতে, আত্মা হইতে হইয়া থাকে, তেমনি সেই মূর্তিতে স্বরূপান্তরীকৃত হইতেছি।”
ঠিক যেমন শুরুতে ইস্রায়েল জাতির লোকদের কঠিন হৃদয়ের কারণে পুরাতন নিয়মের মহিমা তাদের কাছে অনাবৃত ছিল, নূতন নিয়মের মহিমাও যতক্ষণ না কেউ খ্রীষ্টেতে মন পরিবর্তন না করে ততক্ষণ পর্যন্ত গোপন বা অনাবৃত থাকে (২ করিন্থীয় ৩:১২-১৬; এবং যাত্রাপুস্তক ৩৪:২৯-৩৫ পদও দেখুন)। এই কারণে যীশুতে বিশ্বাস করার ফলের মধ্যে শাস্ত্রে তাঁকে দেখার সক্ষমতাও রয়েছে। যাহউক, যীশুতে বিশ্বাস করার এটাই একমাত্র ফল নয়, এবং আজকের শাস্ত্রাংশে খ্রীষ্টেতে বিশ্বাসের আরও ফলাফল সমন্ধে পৌল তুলে ধরেছেন।
পৌল বলেন যে, তিনিই হলেন প্রভু যার কাছে আমরা আত্নায় নূতন নিয়মের মহিমা আবৃতকারী আবরণ অপসারণের জন্য ফিরে আসি (২ করিন্থীয় ৩:১৭)। তথাপি, আমরা যেমন জানি যে তিনি যীশুকেই প্রভু হিসাবে তুলে ধরেছেন, এর মধ্যদিয়ে তিনি কি বোঝাতে পারেন? পৌল কি এটা বোঝাতে চেয়েছেন যে যীশু হলেন পবিত্র আত্না? এই প্রশ্নের উত্তর হলো না, কেননা এই একই পদে তিনি একজন ভিন্ন ব্যক্তিকে “প্রভুর আত্না” যথা, পবিত্র আত্নার কথা উল্লেখ করেছেন (১৭ পদ)। প্রেরিত পৌল এখানে কি করছেন তা হলো তিনি আমাদেরকে পুত্র ঈশ্বরের, এবং পবিত্র আত্না ঈশ্বরের, দুই স্বতন্ত্র ব্যক্তি যারা একই প্রকৃতির এবং স্বত্ত্বার। পুত্র এবং পবিত্র আত্না সম্পূর্ণভাবে তাদের কাছে ঐক্যবদ্ধ, লোকদেরকে জীবন দেওয়ার কাজ হলো আত্নার কাজ, পুত্রের কাজও হলো তাই এবং পুত্রের কাজ হলো লোকদেরকে জীবন দেওয়া, এটাই হলো আত্নারও কাজ। জীবনের উৎস হলো ঈশ্বরের পুত্র যা পবিত্র আত্নার পুনজন্মের এবং পবিত্রকরণের কাজের সাথে জড়িত। এভাবে, পৌল আরও বলেছেন যে “শেষ আদম জীবনদায়ক আত্মা হইলেন” (১ করিন্থীয় ১৫:৪৫)। চার্লস হগ লিখেছেন, “প্রভু যিনি আত্না এর অর্থ হলো, প্রভু তিনি এমন একজন যিনি আত্নার সাথে, এই স্বত্ত্বার, ক্ষমতায় এবং মহিমায় সমান; যেখানে আত্না আছেন তিনিও সেখানে আছেন, এবং আত্না যা করেন তিনিও তা করেন।”
আর প্রভুই সেই আত্মা; এবং যেখানে প্রভুর আত্মা, সেইখানে স্বাধীনতা ( ২ করিন্থীয় ৩:১৭)। এই প্রেক্ষাপটে, পৌল হয়তো অবশ্যই পুরাতন নিয়মের পরিচর্যার দায় থেকে স্বাধীন হওয়াকে উল্লেখ করছে। নূতন নিয়ম স্বাধীনতা প্রদান করেন কারণ এটা হলো “ধার্মিকতার পরিচর্যা” (১৮ পদ) যা আমাদেরকে ঈশ্বরের বিচার আসনের সামনে দাঁড়ানোর যোগ্য করে তোলে, এর ফলে যে গৌরবময় সত্য আছে তা হলো “অতএব এখন, যাহারা খ্রীষ্ট যীশুতে আছে তাহাদের প্রতি কোন দণ্ডাজ্ঞা নাই।” (রোমীয় ৮:১)।
অধিকন্তু, দণ্ডাজ্ঞা থেকে স্বাধীন হওয়ার সাথে সাথে আমরা বাড়তি কিছুও লাভ করি- আর তা হলো খ্রীষ্টের প্রতিমূর্তিতে রুপান্তরিত হওয়া, মহিমা থেকে মহিমায় রূপান্তিরিত হওয়া (২ করিন্থীয় ৩:১৮)। এটাই হলো আমাদের পবিত্রকরণ এবং যখন আমাদেরকে সম্পূর্ণভাবে যীশুর মতো করা হবে, চুড়ান্তভাবে সেটাই হবে আমাদের মহিমান্বিতকরণ। পুরাতন নিয়ম এটা দেয় না, কিন্তু নূতন নিয়ম এটা বিনামূল্যে দেয়। তাই, পুরাতন নিয়মের অধীনে জীবিত থাকার জন্য যেকোন পদক্ষেপ, করিন্থীয়তে ভ্রান্ত ভাববাদীর যেমন করার জন্য চেষ্টা করছিলেন, এমন কাজ বরং তাদেরকে পিছনে টেনে নেয় এবং ঈশ্বরের মহিমা থেকে দুরে সরিয়ে রাখে।
ঈশ্বরের মুখখ্রীষ্টের সাদৃশ্যে রুপান্তরিত হওয়া হলো পরিত্রাণের একটি সুবিধা। যদিও মাঝে মাঝে আত্নিক বৃদ্ধির প্রক্রিয়াকে খুবই ধীর মনে হতে পারে, ঈশ্বরের অনুগ্রহের দ্বারা খ্রীষ্টেতে আমাদেরকে সান্ত্বনা দেওয়া হয়েছে। সঠিক সময়ে, এমন কি যদি এটা মানানসই এবং শুরু বলে মনে হয়, এবং এমন কি যখন এটা মনে হয় যে আমরা দুই ধাপ আগাচ্ছি এবং এক ধাপ পিছিয়ে পড়ছি, আমরা পবিত্রতায় সত্যিকারের বৃদ্ধি দেখতে পাব।
এই প্রবন্ধটি মূলতঃ লিগনিয়্যার মিনিস্ট্রিজ ব্লগে প্রকাশিত হয়েছিল।