


দৃঢ়তা, সাহস এবং প্রেম
06-05-2025যিরুশালেমের জন্য দানসংগ্রহ


“সপ্তাহের প্রথম দিনে তোমরা প্রত্যেকে আপনাদের নিকটে কিছু কিছু রাখিয়া আপন আপন সঙ্গতি অনুসারে অর্থ সঞ্চয় কর; যেন আমি যখন আসিব, তখনই চাঁদা না হয়” (২ পদ)।
পৌল যে মণ্ডলীকে উদ্দেশ্য করে পত্র লিখতেন, তিনি প্রায়ই সেই মণ্ডলীর জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু ব্যহারিক নির্দেশনা দিয়ে তার পত্রের চুড়ান্ত অধ্যায়টি শেষ করতেন, যা আদিমণ্ডলীর লোকেরা যেভাবে পালন করতো তা আধুনিক যুগের পাঠকরা একইভাবে অনুসরণ করতে পারেন না। আমরা এমনটা দেখতে পাই, উদাহরস্বরুপ, আমরা এটা ১ করিন্থিীয় ১৬ অধ্যায়ে দেখতে পাই যা আমাদেরকে প্রেরিত পৌলের তাৎক্ষনিক যাত্রার পরিকল্পনা এবং যিহুদার যিরুশালেমের মণ্ডলীগুলোর জন্য চাঁদা সংগ্রহের বিষয়ের নির্দেশনা সরবরাহ করে দেয়। তাছাড়াও, এই অধ্যায়ে আমরা আমাদের নিজেদের প্রেক্ষাপটে ব্যবহার করার মতো নীতিমালাগুলোও দেখতে পাই, এমন কি যদিও সেগুলোকে ঠিক কিভাবে অনুসরণ করব সেই পদ্ধতিগুলো আমাদের কাছে এই প্রত্রের প্রথম গ্রাহকদের চেয়ে ভিন্ন মনে হয়।
১৬:১ পদে, পৌল বলেছেন, “এই চাঁদা সংগ্রহ হবে পবিত্রগণের জন্য”। তিনি যিহুদার এবং যিরুশালেমের খ্রীষ্টিয়ানদের জন্য, যারা সাংঘাত্নিক নির্যাতন সহ্য করার কারণে মারাত্নক দারিদ্রতায় কষ্ট পাচ্ছিলেন তাদেরকে সাহায্য করার জন্য চাঁদা সংগ্রহের বিষয় বলছেন। পৌল এই পত্রে প্রায়ই তার এই চাঁদা সংগ্রহের বিষয়ে বলেছেন, যেহেতু তিনি এটাকে পরজাতী থেকে আসা খ্রীষ্টিয়ানদের জন্য যারা যিহুদী খ্রীষ্টিয়ানদের সাথে যিরুশালেম এবং যিহুদার বাহিরে বসবাস করতেন তাদের জন্য একতার একটা গুরুত্বপূর্ণ এবং দৃশ্যমান চিহ্ন হিসাবে মনে করতে (উদাহরণ., রোমীয় ১৫:২৫-২৯; ২ করিন্থীয় ৯)। এই চাঁদা সংগ্রহ, দরিদ্রদের স্মরনে রাখার পৌলের অঙ্গীকারের একটি পূর্ণতা হিসাবেও দেখা যায় ( গালাতীয় ২:১-১০ দেখুন)।
প্রেরিত করিন্থীয়দের “প্রত্যেক সপ্তাহের প্রথম দিনে কিছু আলাদা করে” রাখার জন্য নিদের্শনা দিয়েছেন (১ করিন্থীয় ১৬:২)। খ্রীষ্টিয়ানরা যে রবিবারে যা প্রভুর দিন হিসাবে পরিচিত এই দিনে আরাধনা এবং সহভাগীতার জন্য মিলিত হতেন, সে বিষয়ে আমাদের কাছে সবচেয়ে প্রাথমিক পর্যায়ের প্রমাণ রয়েছে। সপ্তাহের প্রথম দিনে খ্রীষ্টের পুনরুত্থান উদযাপন করার জন্য মণ্ডলীর একসঙ্গে মিলিত হওয়াটা প্রৈরিতিক যুগের পরবর্তী আবিষ্কার ছিল না, কিন্তু এটা নুতন নিয়মের শুরু থেকেই ছিল। যেভাবেই হউক, পৌল করিন্থীয় বিশ্বাসীদের প্রত্যেকেই “সংগতি অনুসারে সঞ্চয় করার” জন্য বলেছেন (২ পদ)। এর অর্থ হলো প্রভুর হস্তের অধীনে খ্রীষ্টিয়ানরা যেভাবে উন্নতি লাভ করে সেই সংগতি অনুসারে খ্রীষ্টিয়ানদের উচিত দরিদ্রদের সাহায্য প্রদান করা। যদিও এর অর্থ কি বা মণ্ডলীর কি প্রয়োজন এইবিষয়ে সেখানে কোন সুত্র নাই তবুও যাদের বেশী আছে তাদের যাদের কম আছে তাদের চেয়ে বেশী দান দেওয়া উচিত। মেথিউ হেনরী মন্তব্য করেছেন: “ঈশ্বর আমাদের প্রতি যে পরিমানে অনুগ্রহ করছেন আমরাও যেন সই পরিমানে অন্যদের প্রতি অনুগ্রহ দান করি, তাই ঈশ্বর আমাদের কাছে আশা করেন। আমাদের যা আছে সবই ঈশ্বরের কাছ থেকে; তিনি আমাদের যত পরিমানে দেন, তিনি তত পরিমানে দেওয়ার জন্যও আমাদেরকে সমর্থ করেন, এবং সেই পরিমানেই আমরাও যেন দান করি যা তিনি আমাদের কাছে আশা করেন, অর্থাৎ যাদের কম সামর্থ রয়েছে তাদের চেয়ে আমাদের অধিক পরিমানে দান দেওয়া উচিত, অর্থাৎ আমরা যখন কম সামর্থ ছিলাম তার চেয়ে এখন বেশি সামর্থ তাই আরও বেশী দান দেওয়া উচিত।”
ঈশ্বরের মুখ
মণ্ডলীর সর্বদা তার সদস্যদের উদারদানশীল হওয়ার জন্য এবং যারা নিজেদের অভাব পূরণ করতে পারে না তাদেরকে তাদের আইনসংগত যোগান দেওয়ার জন্য উৎসাহিত করা উচিত। যাদেরকে বেশী দেওয়া হয়েছে, তাদের কাছ থেকে বেশী চাওয়া হয়েছে, এবং প্রভু যেভাবে আমাদেরকে উন্নতি দেন, আসুন আমরাও সেই পরিমানে মণ্ডলীকে এবং দয়ার কাজগুলোকে দান করতে ইচ্ছুক হই।
এই প্রবন্ধটি মূলতঃ লিগনিয়্যার মিনিস্ট্রিজ ব্লগে প্রকাশিত হয়েছিল।