


করিন্থীয়দের প্রতি সমাপনী সম্ভাষন
01-05-2025


যিরুশালেমের জন্য দানসংগ্রহ
08-05-2025দৃঢ়তা, সাহস এবং প্রেম



১ করিন্থীয় ১৬:১৩-১৪
“তোমরা জাগিয়া থাক, বিশ্বাসে দাঁড়াইয়া থাক, বীরত্ব দেখাও, বলবান হও। তোমাদের সকল কার্য প্রেমে হউক।”
সঠিক খ্রীষ্টিয় বিশ্বাস এবং চর্চা কখনই পৌলের মন হইতে দুরে ছিল না, এমন কি যখন তিনি ভ্রমনের পরিকল্পনার মতো সাধারণ বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করতেন সেই সমস্ত বিষয় তার মনে থাকতো। আজকের শাস্ত্রাংসে আমরা এই বিষয়টি পরিষ্কারভাবে দেখতে পাই। ১ করিন্থীয় ১৬:১৩-১৪ পদে পৌল মাকিদনিয়ার মধ্যদিয়ে যাওয়ার, তিমথীয়কে পাঠানোর, করিন্থে তার সঙ্গে যাওয়ার জন্য আপোল্লোকে অনুরোধ এই সমস্ত ইচ্ছা প্রকাশ, করিন্থীয় মণ্ডলীকে কিছু ব্যবহারিক শিক্ষা প্রদান করে। সবসময়ের মতোই, এই শিক্ষাগুলো ঈশ্বর এবং তাঁর সুসমাচার সমন্ধীয় অপরিহার্য সত্য থেকে প্রবাহিত হয়েছে।
প্রথমত, প্রেরিত বিশ্বাসীদেরকে “জাগিয়া থাকতে, বিশ্বাসে দাঁড়িয়ে থাকতে” (১৩ পদ) আহবান করেছেন। ইংরেজী ভাষায় এখানে ডেফিনিট আরটিক্যাল “the” ব্যবহার করা হয়েছে যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কেননা পৌল এখানে লোকদেরকে তারা যে বিশ্বাস প্রভুর উপর রেখেছেন তা দৃঢ়ভাবে বজায় রাখার জন্য আহবান করেন নি। অবশ্যই, বিশ্বাসে দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে থাকা গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু এখানে প্রেরিত পৌলের মনে এর চেয়েও বেশী কিছু ছিল। আমাদেরকে “বিশ্বাসে” দাঁড়িয়ে থাকতে হবে- অর্থাৎ ঈশ্বরের চুড়ান্ত প্রকাশ যা ভাববাদীদের এবং প্রেরিতদের দ্বারা দেওয়া হয়েছে এবং যা পুরাতন এবং নূতন নিয়মে শাস্ত্রে বর্তমানে আমাদের কাছে এসেছে তাতে বিশ্বাসে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে। অন্য কথায়, আমাদেরকে পবিত্র শাস্ত্রে যে মতবাদ দেওয়া হয়েছে তাতে কোন রকম দোদুল্যমান না হয়ে, স্থিরভাবে দাড়িঁয়ে থাকতে হবে, যেমন যিহুদা ৩ এই বিষয়কে এভাবে লিপিবদ্ধ করেছে, “কেননা বিশ্বাস যা একবারই সকলের জন্য বিশ্বাসীদেরকে মুক্ত করার জন্য দেওয়া হয়েছিল।” উনিশ শতকের প্রেসবিটারিয়ান মহান পন্ডিত চালর্স হগ এই বিষয়ে মন্তব্য করে অর্থাৎ এই বিষয়টি সকল অর্থডক্স- সত্য বিশ্বাসকারী- মণ্ডলীদের স্বীকারকৃত মতবাদকে দৃঢ়ভাবে ধারণ করে বলে প্রয়োগ ব্যখ্যা করেছেন। এই মতবাদ এমন বিষয়গুলোকে যেমন খ্রীষ্টের ঈশ্বরত্ব এবং সত্যিকারের মনুষ্যত্ব, ত্রিত্বের মতবাদ, একমাত্র বিশ্বাস হেতু ধার্মিকতা, এবং মহান প্রত্যেষ্ট্যান্ট বিশ্বাসসুত্র এবং স্বীকারোক্তিগুলোতে যে সত্যগুলোকে সারাংশ করা হয়েছে সগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করতো।
পৌল আমাদেরকে “বীরত্ব দেখাতে, বলবান হতে” (১ করিন্থীয় ১৬:১৩) বলেছেন। প্রথম শতাব্দিতে, “বীরত্ব দেখানো” এই ধরণের কথার মানে ছিল “সাহসী হওয়া”, তাই পৌল সকল বিশ্বাসীদেরকে, নারী এবং পুরুষদের এমন হওয়ার জন্য, সত্যে বলবান হওয়ার জন্য আহবান করছেন। তিনি আমাদেরকে আহবান করছেন যেন আমরা সংষ্কৃতির চাপকে আমাদেরকে পরিবর্তন করতে বা বাইবেলের সত্য পরিত্যাগ করতে না দিই কিন্তু পবিত্র আত্নার শক্তিতে দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে থাকি, পবিত্র আত্নার শক্তিই আমাদেরকে শেষ পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকতে সাহায্য করেন (১:৮ পদ)।
আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই, পৌল ১ করিন্থীয় ১৩ অধ্যায়ে আমাদেরকে যে সমস্ত কিুছু বলেছেন, তার সাথে পৌল আরও যুক্ত করে বলেছেন, আমাদেরকে সমস্ত কিছু করতে হবে প্রেমে (১৪ পদ)। যেহেতু আমরা সত্যে দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে থাকি এটা মনে রাখার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি সত্য । কঠোরতা এবং দৃঢ়তা এক বিষয় নয়, কিন্তু অতি সহজেই আমরা এই দুইটাকে গুলিয়ে ফেলি। বিশ্বাসের জন্য দাঁড়িয়ে থাকার মানে হলো নম্রতার সহিত দাঁড়িয়ে থাকা, স্বীকার করা যে একমাত্র অনুগ্রহের দ্বারাই আমরা খ্রীষ্টকে জানি এবং যে কেহ খ্রীষ্টেতে বিশ্বাস করবে তারাই ঈশ্বরের সাথে সন্মিলিত হবে এই সুসমাচারটি ছড়িয়ে দেওয়া।
ঈশ্বরের মুখ
ম্যাথিউ হেনরী মন্তব্য করেছেন, “খ্রীষ্টিয়ানদের সতর্ক হওয়া উচিত যে সেবামুলক কাজ শুধুমাত্র তাদের হৃদয়ে রাজ্যত্ব করে না, কিন্তু তাদের জীবনেও আলোকিত হবে, অধিকন্তু সুসমাচারের বিশ্বাসকে রক্ষা করার যে তাদের চেষ্টা তাতেও রাজত্ব করবে।” যেহেতু আমরা বিশ্বাসের জন্য দৃঢ়ভাবে দাঁড়াতে চাই, আসুন আমরা তা জ্ঞানে এবং প্রেমে করি, সংষ্কৃতি যে অনেকগুলো উপায়ে সুসমাচারকে খাটো করতে চেষ্টা করে সেই বিষয়ে সচেতন থেকে, এবং যারা যীশুর বাইরে আছে, আমরা যে সত্যিকারে তাদেরকে পরিত্রান প্রাপ্ত হিসাবে দেখতে চাই তা দেখিয়ে, আমাদের বিশ্বাসে দৃঢ়ভাবে দাঁড়াই।
এই প্রবন্ধটি মূলতঃ লিগনিয়্যার মিনিস্ট্রিজ ব্লগে প্রকাশিত হয়েছিল।