


প্রার্থনার উদ্দেশ্য
22-04-2025


সমস্ত সান্ত্বনার ঈশ্বর
29-04-2025এশিয়াতে পৌলের ক্লেশভোগ


২ করিন্থীয় ১:৮-১০
“বরং আমরা আপনাদের অন্তরে এই উত্তর পাইয়াছিলাম যে, মৃত্যু আসিতেছে, যেন আপনাদের উপরে নির্ভর না করিয়া মৃতগণের উত্থাপনকারী ঈশ্বরের উপরে নির্ভর করি” (৯ পদ)।
সাধারণ ভাবে বলা হয়েছে যে ঈশ্বর বিশ্বাসীদের ক্লেশ ভোগের সময় সান্ত্বনা প্রদান করেন, প্রেরিত পৌল আজকের শাস্ত্রাং‡k প্রভু একটি নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে কিভাবে প্রেরিতকে সান্ত্বনা করেছেন, তা ব্যাখ্যা করার দ্বারা এই সত্যকে সুষ্পষ্ট করেছেন। এভাবে ব্যাখ্যা করার মধ্যদিয়ে, তিনি আমাদেরকে আরও ভাল বুঝতে সাহায্য করেছেন যে, ঈশ্বর যে সান্ত্বনা দেন তা আমাদেরকে আত্ন-নির্ভরশীলতা থেকে আরও বেশী তাঁর উপর নির্ভরশীলতার দিকে চালিত করে।
প্রেরিত পৌল ২ করিন্থীয় ১:৮ পদের উদ্ধৃতি দিয়ে “এশিয়ায় আমাদের যে ক্লেশ ঘটিয়াছিল” সেসমন্ধে কথা বলেছেন। কিছু কিছু পণ্ডিতগণ যুক্তি দেন যে, প্রেরিত পৌল এখানে ইফিষের গণ্ডগোলের কথা উল্লেখ করেছেন, যা ঘটেছিল যখন স্বর্ণকার দীমিত্রীয় এবং অন্যান্য শিল্পকরগণ প্রেরিত পৌল এবং অন্যান্য খ্রীষ্টিয়ানদেরকে বিরোধীতা করেছিল তখন কারণ তারা সুসমাচারে বিশ্বাস করাকে তাদের রোজগারের প্রতি হুমকি মনে করেছিল, তাদের রোজগার বেশীরভাগই মুর্তি এবং দিয়ানাদেবীর সাথে সম্পর্ক যুক্ত অনান্য দেবতাদের মূর্তি বিক্রির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ছিল (প্রেরিতদের কার্যাবলী ১৯ অধ্যায়)। অন্য পণ্ডিতগণ বিশ্বাস করেন যে, পৌল এমন একটি ক্লেশ ভোগের ঘটনা উল্লেখ করছেন যা লূক প্ররিতদের কার্যাবলীতে উল্লেখ করেন নি। যাই হউক না কেন, এই কষ্ট এত কঠিন ছিল যে পৌল এবং তার সঙ্গীরা এমনকি “জীবন সম্পর্কে” হতাশ হয়ে পড়েছিলেন এবং তারা এমন অনুভব করেছিলেন যে, “যেন মৃত্যু দণ্ড পেয়েছেন” (২ করিন্থীয় ১:৮-৯)। তাদের যন্ত্রনার তীব্রতা তাদেরকে ভাবতে বাধ্য করেছিল যে এর মধ্যদিয়ে তাদের জীবন চলেও যেতে পারতো।
পৌল যেমন ব্যাখ্যা করেছেন, তিনি এই সাংঘাতিক ক্লেশ থেকে উদ্ধার পেয়েছিলেন (১০ পদ)। তথাপি, পৌলের এই তীব্র ক্লেশভোগের উদ্দেশ্য উপলদ্ধি করার আগ পর্যন্ত এটা প্রকাশ করা হয় নি, অর্থাৎ, তাকে এবং অন্যান্য বিশ্বাসীদেরকে তাদের নিজেদের উপর নির্ভর নয় “কিন্তু মৃতগণের উত্থাপনকারী ঈশ্বরের উপরে” নির্ভর না করানো পর্যন্ত এটা প্রকাশ করা হয় নি। এখানে, ঈশ্বর কেন আমাদের জীবনে দুঃখভোগ ঘটতে দেন এবং প্রায়ই তাঁর সান্ত্বনা দেখতে কেমন হয় আমরা সেই গুরুত্বপূর্ণ অন্তর্দৃষ্টি দেখতে পাই। আমাদের জীবনে বেশীরভাগ দুঃখভোগ ঘটে যেন আমরা বুঝতে পারি যে নিজেদের উপর নির্ভর করার কোন মানে নাই কিন্তু পরিবর্তে আমরা যেন আরও বেশী ঈশ্বরের উপর নির্ভর করি। খ্রীষ্টতে দুঃখভাগ এবং খ্রীষ্টের জন্য দুঃখভোগ আমাদেরকে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করতে বাধ্য করে এবং আমাদের যা কিছু আছে এবং আমাদের সমস্ত কিছু আশা আকাংখার লক্ষ্য যে, একমাত্র তিনি তা স্বীকার করতে বাধ্য করে (গীতসংহিতা. ৭৩:২৫)।
তাই প্রায়ই, এমন কি যদিও আমরা খ্রীষ্টেতে বিশ্বাস করি, আমরা গর্বিত লোক, যারা তাঁর উপর আমাদের সম্পূর্ণভাবে এবং পরিপূর্ণভাবে নির্ভর করার প্রয়োজনীয়তাকে সম্পূর্ণভাবে বুঝি না। আমরা আমাদের মত করে এবং আমাদের নিজেদের শক্তিতে কাজ করতে চাই। কিন্তু অবশ্যই আমরা দুর্বল এবং অনির্ভরযোগ্য। যে মহান সান্ত্বনা প্রভু আমাদেরকে দিতে পারেন তা হলো আমাদের নিজের উপর থেকে আমাদের দৃষ্টি তাঁর দিকে ফিরাতে পারেন, কেননা একমাত্র তাঁর মধ্যেই মুত্যুকে মোকাবেলা করার এবং জয় করার ক্ষমতা রয়েছে। তিনি আমাদেরকে দুঃখভোগ করতে দিয়ে তাঁর দিকে আকৃষ্ট করেন। জন কেলভিন মন্তব্য করেন, এই ব্যধি [আত্ন-নির্ভরতা] মানুষের মনের এত বেশী গভীরে নিবদ্ধ আছে যে, এমন কি সবচেয়ে অগ্রগামী লোকেরাও এ থেকে মুক্ত হতে পারে না, যতক্ষণ না ঈশ্বর তাদের দৃষ্টি গোচরে মৃত্যু না রাখেন।”
ঈশ্বরের মুখ
আমাদের আত্ন-নির্ভরতার সকল কল্পনাগুলো সরিয়ে নেওয়ার একটি উপায় দুঃখভোগের আছে এবং তা আমাদেরকে শুধুমাত্র ঈশ্বরের উপর এবং তাঁর বিশ্বস্ততার উপর নির্ভর করতে জোড় করে। সেই অর্থে, এটা প্রভুর কাছ থেকে তাঁর লোকদের জন্য একটি শক্তিশালী মনে করিয়ে দেওয়া বার্তা। সাধারণত যেখানে আমাদেরকে দুঃখভোগের অন্বেষন করা উচিত না, সেখানে যখন এটা আমাদের জীবনে আসে, তখন আমাদের এটাকে ঘটতে দেওয়া উচিত যেন এটা আমাদের দৃষ্টি প্রভুর উপর এবং তাঁকে যে আমাদের প্রয়োজন রয়েছে তার উপর নিবিষ্ট করতে পারে। এই উপায়ে, এটা আমাদের পবিত্রকরণে অনেক শক্তিশালী ভুমিকা রাখতে পারে।
এই প্রবন্ধটি মূলতঃ লিগনিয়্যার মিনিস্ট্রিজ ব্লগে প্রকাশিত হয়েছিল।