


ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞাগুলো খ্রীষ্টেতে পূর্ণ হয়েছে
17-04-2025


এশিয়াতে পৌলের ক্লেশভোগ
24-04-2025প্রার্থনার উদ্দেশ্য


“ইহাতে তোমরাও বিনতি দ্বারা আমাদের পক্ষে সাহায্য করিতেছ, যেন অনেকের দ্বারা যে অনুগ্রহ-দান আমাদিগকে দত্ত হইয়াছে, তন্নিমিত্ত অনেক মুখ হইতে আমাদের পক্ষে ধন্যবাদ প্রদান করা হয়।”
এশিয়াতে পরিচর্যাকালীন সময়ে পৌল এবং তার সহকর্মী সাংঘাত্নিক নির্যাতনের সম্মুখীন হয়েছিলেন, তাদের দুঃখভোগ এত বেশী বেদনাদায়ক ছিল যে তারা ভেবেই নিয়েছিলেন যে তারা মারা যাবেন। শেষে এই বিষয়টি তাদেরকে ঈশ্বরের উপর আরও বেশী সহনশীল করে তোলে (২ করিন্থীয় ১:৮-৯)। শেষে, প্রভু তাদেরকে তাদের দুঃখকষ্ট থেকে উদ্ধার করেন এবং ভবিষতেও তিনি তাদেরকে রক্ষা করবেন এই দৃঢ় ধারণা প্রদান করেন। বস্তুত, তারা একমাত্র প্রভুর উপরই তাদের আশা স্থাপন করেন যে, তিনি তাদেরকে আবারও উদ্ধার করবেন (১০ পদ)।
কেউ হয়তো ভাবতে পারেন যে, পৌলের এমন দৃঢ়তা অন্যদেরকে নিশ্চিত আসন্ন নির্যাতন থেকে উদ্ধারের জন্য প্রার্থনা করার জন্য অনুরোধ করতে চালিত করতো না। যাহউক, আজকের শাস্ত্রাং‡k তিনি করিন্থীয়দেরকে তাদের জন্য প্রার্থনা করার জন্য অনুরোধ করেছেন যেন তারা তাদের বিপদ থেকে উদ্ধার পান, এমন কি তিনি, প্রেরিত এবং তার সঙ্গীদের জন্য তাদের প্রার্থনায় “অবশ্যই সাহায্য” করার জন্য বলছেন (১১ পদ)। প্রেরিত ঈশ্বরের উদ্ধারের নিশ্চয়তাকে সেই উদ্ধারের জন্য প্রার্থনার আর দরকার নাই বলে প্রার্থনাকে অবহেলা করার একটি কারণ হিসাবে দেখেন নি। আমরা বলতে পারি যে, তিনি প্রার্থনাকে এই উদ্ধারের নিশ্চয়তার জন্য আরও বেশী প্রয়োজনীয় করে তুলে ধরেছেন। এটা ঈশ্বরের সার্বভৌম্য বিধান এবং মানুষের কাজের মধ্যকার সম্পর্কের বিষয়ে একটি বড় প্রশ্নকে স্পর্শ করে। আমরা জানি যে, যা কিছু ঘটবে তা ঈশ্বর নির্ধারণ করে রেখেছেন (ইফিষীয় ১:১১) এবং তাঁর উদ্দেশ্যসমুহ অবশ্যই অর্জিত হবে। তাঁর কোন উদ্দেশ্যই বিফল হবে না (ইয়োব ৪২:২)। কিন্তু শাস্ত্র এই সত্যের সাথে ধারণ করেন যে, আমাদেরকে অবশ্যই কাজ করতে হবে, অর্থাৎ “[আমরা] কিছু প্রাপ্ত হই না, কারণ [আমরা] যাচ্ঞা করি না” (যাকোব ৪:২)। প্রভু তার উদ্দেশ্যসমুহকে তাঁর সার্বভৌম্য ক্ষমতা মধ্যে এবং প্রার্থনা এবং তাঁর লোকদের সেবাকাজের মধ্যদিয়ে সাধন করে থাকেন। আমাদেরকে প্রায়ই জিজ্ঞাসা করা হয়, “ঈশ্বর যদি সার্বভৌম্য হয়ে থাকেন তবে কেন আমাদের প্রার্থনা করা উচিত?” সত্যে, আমাদেরকে প্রার্থনা করতে থাকা উচিত “যেহেতু ঈশ্বর সার্বভৌম্য, তাই আমাদেরকে অবশ্যই প্রার্থনা করা উচিত,” কেননা আমরা জানি প্রভু তাঁর প্রতিজ্ঞাসমুহ সাধন করার জন্য আমাদেরকে ব্যবহার করতে চান।
২ করিন্থীয় ১:১১ পদে পৌল বলেছেন যে, করিন্থীয়দের অবশ্যই প্রার্থনা করা উচিত কারণ প্রেরিত এবং তার সঙ্গীরা যে আশির্বাদ লাভ করেন তার জন্য “যেন অনেকেই ধন্যবাদ দিতে পারেন”। এখানে, আমরা মধ্যস্থতাকারী প্রার্থনার উদ্দেশ্য সম্পর্কে একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্ন্তদৃষ্টি লাভ করি। আমরা মনে করতে পারি যে অনেক লোকদেরকে প্রার্থনা করার অনুরোধ করে আমরা যা চাই তা করতে ঈশ্বরকে কোন না কোনভাবে আরও বেশী ইচ্ছুক করে তুলি। কিন্তু কেন আমাদের অন্যদেরকে প্রার্থনা করতে অনুরোধ করা উচিত এটা এই কারণে নয়। কিন্তু, আমরা লোকদেরকে প্রার্থনা করতে বলি কারণ ঈশ্বরের লোকেরা যখন প্রার্থনায় এক হয় তখন তিনি খুশী হন। অধিকন্তু, অন্যদেরকে প্রার্থনার অনুরোধ, যখন তারা দেখবে যে, ঈশ্বর তাদের প্রার্থনার উত্তর দিয়েছেন তখন তাদেরকে ঈশ্বরকে প্রশংসা করার সুযোগ প্রদান করে। চালর্স হগ মন্তব্য করেন, “এভাবে লোকেদের দুঃখ কষ্ট বা বিপদে প্রার্থনায় তাদেরকে এক করাই হলো ঈশ্বরের পরিকল্পনা, যেন সেই উদ্ধার কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনের [বা আনন্দ] এবং প্রশংসা করার কমন একটি বিষয়ে পরিনত হতে পারে। এভাবে সমস্ত হৃদয় ঈশ্বরের কাছে আকর্ষিত হয় এবং খ্রীষ্টিয় সহভাগীতা সামনে এগিয়ে যায়।”
ঈশ্বরের মুখ
একটি নিশ্চিত ফলাফলের জন্য প্রার্থনায় লোকদের সংখ্যা বৃদ্ধি সাধারণত প্রভুকে সেই ফলাফল সাধনে মঞ্জুর করে এমন নয়। পক্ষান্তরে, এর উদ্দেশ্য হলো প্রার্থনার প্রয়োজনীয়তা সর্ম্পকে আরও বেশী লোকদেরকে সচেতন করা যেন যখন ঈশ্বর কাজ করেন যেন সেগুলো তাঁর ক্ষমতায় এবং তাঁর উপর আস্থায় আরও বেশী বিশ্বাসযোগ্য হয়ে উঠে। সেভাবে, অন্যদেরকে প্রার্থনা করার জন্য আমাদের অনুরোধ, আমাদের প্রভুর ক্ষমতা এবং বিশ্বস্ততার প্রতি আমাদের একটি শক্তিশালী সাক্ষ্য হয়ে উঠতে পারে।
এই প্রবন্ধটি মূলতঃ লিগনিয়্যার মিনিস্ট্রিজ ব্লগে প্রকাশিত হয়েছিল।