


আদমে মৃত্যু, খ্রীষ্টেতে জীবন
29-05-2025


খ্রীষ্টের পুনরুত্থানের অত্যাবশ্যকীয়তা
05-06-2025মনুষ্যদের মধ্যে অধিক দুর্ভাগা


১ করিন্থীয় ১৫:১৭-১৯
“আর খ্রীষ্ট যদি উত্থাপিত না হইয়া থাকেন, তাহা হইলে তোমাদের বিশ্বাস অলীক, এখনও তোমরা আপন আপন পাপে রহিয়াছ। সুতরাং যাহারা খ্রীষ্টে নিদ্রাগত হইয়াছে, তাহারাও বিনষ্ট হইয়াছে। শুধু এই জীবনে যদি খ্রীষ্টে প্রত্যাশা করিয়া থাকি, তবে আমরা সকল মনুষ্যের মধ্যে অধিক দুর্ভাগা.”
বাইবেল ভিত্তিক খ্রীষ্টিয় মতবাদ আপোসহীন কয়েকটি মতবাদ ধারণ করে, এর মধ্যে রয়েছে যীশুর শারীরিক পুনরুত্থান এবং বিশ্বাসীদের ভাবি শারীরিক পুনরুত্থান। প্রেরিত পৌল এই দুই মতবাদের মধ্যে একটি অবিচ্ছেদ্য সংযোগ স্থাপন করেছেন আমরা একটিকে বাদ দিয়ে অন্যটিকে নিশ্চিত করতে পারি না (১ করিন্থীয় ১৫:১২-১৬)। এই ধরণের শিক্ষা চালিয়ে গিয়ে, আজকের শাস্ত্রাংশে প্রেরিত পৌল ব্যাখ্যা করেছেন যে ভবিষতে কোন পুনরুত্থান নাই এমন বিষয় বিশ্বাস করার পরিনতি হলো খ্রীষ্টের পুনরুত্থান আমাদের জন্য যা মানে রাখে তা অস্বীকার করা।
কেননা মৃতগণের উত্থাপন যদি না হয়, তবে খ্রীষ্টও উত্থাপিত হন নাই। আর খ্রীষ্ট যদি উত্থাপিত না হইয়া থাকেন, তাহা হইলে তোমাদের “বিশ্বাস অলীক, এখনও আমরা [আমাদের] পাপে রহিয়াছি” (১৬-১৭ পদ)। পৌলের উক্তি খুবই উল্লেখযোগ্য, কেননা এটা পৌলের চেতনাকে প্রকাশ করে যে, যীশুর মৃত্যু এবং পুনরুত্থান হলো রক্ষা পাওয়ার জন্য একমাত্র উপায়। যদি যীশু মৃত থাকতেন, তবে ঈশ্বর অন্য কোন উপায়ে আমাদেরকে রক্ষা করতে পারতেন এমন চিন্তা করা আমাদের উচিত নয়। আমাদের সৃষ্টিকর্তা যখন পাপের বেতন হিসাবে মৃত্যুকে প্রতিষ্ঠা করেছেন, তিনি এটাও প্রতিষ্ঠা করেছেন যে, প্রায়শ্চিত্ব মৃত্যু ছাড়া হবে না, অর্থাৎ পাপীদের পরিবর্তে কেবলমাত্র একজন নিখুঁত ধার্মিক ব্যক্তির মৃত্যুই পাপের জন্য এই প্রায়শ্চিত্ব সাধন করতে পারে। অধিকন্তু, যেহেতু পাপীদের জন্য শাস্তি হলো মৃত্যু, মৃত্যু যিনি নিঁখুতভাবে ধার্মিক তাঁকে ধরে রাখার তার সাধ্য নাই, তাই পাপীদের পরিবর্তে একজন ধার্মিকের মৃত্যু অবশ্যই পুনরুত্থিত হতে হেতো (প্রেরিত ২:২৪-২৮ পদ দেখুন)। খ্রীষ্টের মৃত্যু এবং পুনরুত্থান ছাড়া ক্ষমা লাভের কোন আশা নাই। জন ক্রিশোসতোম মন্তব্য করেছেন, “খ্রীষ্ট যদি পুনরায় উত্থাপিত না হয়ে থাকেন, তবেতো তিনি হত্যা হন নি, এবং তিনি যদি হত্যা না হয়ে থাকেন, তবে আমাদের পাপ মোচন হয় নি। আমাদের পাপ যদি মোচিত না হয়ে থাকে, আমরা এখনও পাপে আছি, এবং আমাদের সমস্ত বিশ্বাস অর্থহীন।”
যীশু যদি উত্থাপিত না হয়ে থাকেন তবে আমরা যারা জীবিত আছি আমরা এখনও আমাদের আপন আপন পাপের মধ্যে আছি, কিন্তু যারা মারা গেছে তাদের বেলাতেও এটা প্রযোজ্য। বস্তুত, তারা বিনষ্ট হয়েছে (১ করিন্তীয় ১৫:১৮)। ভবিষতের শারীরিক পুনরুত্থানের অনুপস্থিতির অর্থ এই নয় যে লোকেরা কোন না কোন অ-শারীরিক উপায়ে চিরকাল বসবাস করবে, যেমন করিন্থীয়রা যারা পুনরুত্থানকে অস্বীকার করতেন তারা বিশ্বাস করতেন। যদি ভবিষতে শারীরিক কোন পুনরুত্থান না থাকে, তবে খ্রীষ্টেরও পুনরুত্থান নাই, এবং খ্রীষ্টের যদি কোন পুনরুত্থান না থাকে, তাহলে সকলেই আপন আপন পাপে মরে, এবং সকলেই যদি আপন আপন পাপে মরে, তবে খ্রীষ্টিয়ানদেরও অনন্ত জীবনের কোন আশা নাই কিন্তু শুধুমাত্র নরকের অনন্ত মৃত্যুর অভিজ্ঞতা পাবে।
ভবিষতের পুনরুত্থানের অস্বীকার আমাদেরকে কেবলমাত্র এই জীবনের আশা যোগায় আমাদেরকে এমন ব্যক্তিতে পরিনত করে যারা সবচেয়ে বেশী দুর্ভাগা (১৯ পদ)। আমরা যীশুকে অনুসরণ করতে গিয়ে অনেক কিছু ত্যাগ করি, কিন্তু এত কিছু করার পরে সেখানে যদি কোন পুরষ্কার না থাকে অর্থাৎ ভবিষতের কোন পুনরুত্থান না থাকে- আমরা আমাদের জীবনকে অপচয় করছি।
ঈশ্বরের মুখ
খ্রীষ্টের মৃত্যু এবং পুনরুত্থানের বাইরে আর কোন উপায়ে পরিত্রাণ নাই। আমাদের অনন্তকালীন অবস্থা আমরা তাঁর প্রায়শ্চিত্ব সাধনকারী মৃত্যু এবং তৃতীয় দিবসে দেহ এবং আত্নায় জীবনে পুনস্থাপিতকরণকে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি বা না করি তার উপর নির্ভর করে, এবং এই সত্যগুলো আপোষহীন। যে কেহ এই মতবাদকে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করবে না তাকে প্রকৃতপক্ষে একজন খ্রীষ্টিয়ান বলা যাবে না।
এই প্রবন্ধটি মূলতঃ লিগনিয়্যার মিনিস্ট্রিজ ব্লগে প্রকাশিত হয়েছিল।