


সকল প্রোটেস্ট্যান্ট “ধর্মবিরুদ্ধমত” এর মধ্যে সবচে’ বড় কোনটি?
19-09-2024


মাউন্ট সিয়োনের মতো-গীতসংহিতা ১২৫:১-৫
05-02-2025একটি নিশ্চিত ভিত্তি







মথি ৭:২৪-২৭, পদে যীশু আমাদেরকে কোন এক জনের গৃহের সমন্ধে বলেন: “অতএব যে কেহ আমার এই বাক্য শুনিয়া পালন করে, তাহাকে এমন একজন বুদ্ধিমান লোকের তুল্য বলিতে হইবে, যে পাষাণের উপরে তাহার গৃহ নির্মাণ করিল।” যীশু আরও বলেন যে, যখন বৃষ্টি, ঝড়-তুফান, এবং বন্যা আসল সেই গৃহ টিকে থাকল। আমি প্রায়ই ভাবি যে, যীশু এই শাস্ত্রাংসে কি ধরণের গৃহের বর্ণনা দিচ্ছেন। খুব সম্ভবত সকলেই যারা সেই সময়ে যীশুর শিক্ষা শুনেছে তারা সবাই হয়তো সেই সময় মাটি এবং কাঁদা দিয়ে তৈরী তাদের গৃহের কথা চিন্তা করেছেন। সম্ভবত হয়তো আপনিও আপনার শৈশবের বা এখন যে গৃহে বাস করেন তার কথা চিন্তা করতে পারেন।
প্রত্যেকের বাড়ীই আলাদা। এমনকি সেই যুগের মাটি এবং কাঁদা দিয়ে তৈরী গৃহগুলোও ছিল একে অন্যের গৃহ থেকে আলাদা। সেগুলো ছিল ভিন্ন ভিন্ন সাইজের, ডেকোরেশানের এবং অবস্থানে। কিন্তু যীশুর ব্যবহৃত উপমায় সেই গৃহ বলতে একজনের জীবনকে বোঝানো হয়েছে। এই গৃহ বলতে এমন কিছুকে বোঝানো হয়েছে যা আমরা সর্বদাই নির্মাণ করছি যার ফলাফল হলো আমাদের বর্তমান অবস্থান। আমাদের জীবন একে অন্যের থেকে আলাদা। অতএব, এই শাস্ত্রাংসে গৃহ হিসাবে যে প্রত্যেক জীবনকে তুলে ধরা হয়েছে তা দেখতে ভিন্ন হবে। আমরা খ্রীষ্টিয়ানরা ভিন্ন ভিন্ন সময়ে, ভিন্ন ভিন্ন পরিবারগুলোতে, ভিন্ন ভিন্ন পেশায়, এবং ভিন্ন ভিন্ন আহবান নিয়ে জন্মেছি।
এই শাস্ত্রাংসে যীশু এই গৃহের কোন বিশেষ ধরণ বা কোন বিশেষ গুণাবলীর উপর মন্তব্য করেন নি। ফলে, আমাদের জীবন দেখতে কেমন হবে সেই বিষয়ের উপরও তিনি মন্তব্য করেন নি। কিন্তু আমাদের জীবনের ভিত্তিটা কি তিনি তার উপর গুরুত্ব দিয়েছেন। বুদ্ধিমান লোকের গৃহ পাথরের উপর ভিত্তি করে নির্মিত। বুদ্ধিমান লোক পাথরের উপর ভিত্তি করে তার গৃহ নির্মাণ করে, কারণ তিনি যীশুর বাক্য শুনেন এবং তা পালন করেন (২৪ পদ)। তাই, আমাদের গৃহ দেখেতে যেমনই হউক না কেন, আমরা যাই হই না কেন, এবং আমাদের জীবন যে কোন কিছুই ধারণ করুক না কেন, আমাদেরকে একই ভিত্তির উপর তৈরী হতে আহবান করা হয়েছে। আমাদেরকে ঈশ্বরের বাক্যের শ্রোতা এবং পালনকারী হওয়ার জন্য আহবান করা হয়েছে। এর অর্থ এই নয় যে, আমাদের জীবন দেখতে কেমন হবে তা কোন ব্যাপার নয়, কিন্তু এখানে যীশু যা গুরুত্ব দিচ্ছেন তা হলো, ভিত্তি। ভিত্তিই সমস্ত কিছুকে স্থিরিকৃত করে রাখে।
এটা নির্বোধ লোকের বিপরীত, তারও একটি গৃহ আছে: “আর যে কেহ আমরা এই সকল বাক্য শুনিয়া পালন না করে, তাহাকে এমন একজন নির্বাধ লোকের তুল্য বলিতে হইবে, যে বালুকার উপরে আপন গৃহ নির্মাণ করিল” (২৬ পদ)। আমি নির্বোধ লোকের গৃহ কে একটি জরাজীর্ণ কুড়ে ঘর মনে করতাম, কিন্তু তার কি ধরণের বাড়ী ছিল তা শাস্ত্রাংসটি বলেনা। এর পরিবর্তে, সম্ভবত, এটি খুবই জাকজমক পূর্ণ, সাজসজ্জায় সজ্জিত বিশাল বাড়ীও হতে পারে। অথবা এটা হয়তো গড় পরতা অনেকের বাড়ীর মতোই মাটি এবং কাঁদার মতোই হতে পারে। এটা যেমনই দেখতে হউক না কেন, সেই নির্বোধ লোকের গৃহটি পড়ে গিয়েছিল কারণ তিনি এটা বালুকার উপর নির্মাণ করেছিলেন- তিনি যীশুর বাক্য শুনেছিলেন, কিন্তু তিনি তাঁর বাক্য পালন করেন নি। আমরা প্রেত্যেকই আমাদের ব্যক্তিগত গৃহ নির্মাণ করি, এবং সেগুলো সকলই আলাদা। দৃষ্টি প্রতারনা করতে পারে, কিন্তু যা গুরুত্বপূর্ণ তা হলো, ভিত্তি। যীশু কি বলছেন তা কি আমরা শুনছি কিন্তু পালন করছি না অথবা আমরা কি প্রকৃত পক্ষে এটা করছি? আসুন আমরা প্রার্থনা করি – সেগুলো আমাদের নিজেদের বিশেষ পরিস্থিতি, তালন্ত এবং যীশুর এবং তাঁর বাক্যের আহবানের উপর ভিত্তি করে দেখতে যেমনই হউক না কেন যেন আমরা আমাদের গৃহ নির্মাণের ক্ষেত্রে বিশ্বস্ত হই। সত্যিকারের এই নিশ্চিত ভিত্তির উপর আমাদের জীবন নির্মিত হলেই আমাদের জীবন বর্তমানে এবং চিরকালের জন্য স্থিরিকৃত থাকবে।
এই প্রবন্ধটি মূলতঃ লিগনিয়্যার মিনিস্ট্রিজ ব্লগে প্রকাশিত হয়েছিল।