


জীবনদায়ক আত্না
22-05-2025


আদমে মৃত্যু, খ্রীষ্টেতে জীবন
29-05-2025পুনরুত্থিত দেহ সমন্ধে প্রশ্নসমুহ


“কিন্তু কেহ বলিবে, মৃতেরা কি প্রকারে উত্থাপিত হয়? কি প্রকার দেহেই বা আইসে? হে নির্বোধ, তুমি নিজে যাহা বুন, তাহা না মরিলে জীবিত করা যায় না।” (৩৫-৩৬ পদ)।
যীশুর পুনরুত্থান এবং বিশ্বাসীদের পুনরুত্থানের মধ্যে একটি অবিচ্ছেদ্য সংযাগ এবং তাঁর এবং আমাদের পুনরুত্থানের একটি ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা করে এই প্রথম অংশে পৌল তিনি করিন্থীয়দের উত্তর দিয়েছিলেন যারা অস্বীকার করেছিল যে, মতৃরা আবার জীবনে উত্থাপিত হবে (১ করিন্থীয় ১৫:১-৩৪)। পৌলের দ্বিতীয় অংশ আমাদের পুনরুত্থিত দেহগুলোর প্রকৃতির উপর আলোকপাত করে, আজকের শাস্ত্রাংশে এই বিষয়ে পৌল আলোচনা করেছেন।
পৌল যখন লোকদের এই প্রশ্নগুলো, মৃতেরা কি প্রকারে উত্থাপিত হয়? কি প্রকার দেহেই বা আইসে? নিয়ে কথা বলেছেন তখন তিনি যারা শুধুমাত্র বিভ্রান্ত অথবা যারা শাস্ত্রের শিক্ষার উপর আরও বেশী তথ্য জানতে চায় এমন লোকদেরকে উত্তর দিচ্ছেন না (৩৫ পদ)। এখানে প্রেরিত পৌল সেই ধরণের লোকদের বিষয়ে কথা বলেছেন যারা নির্বোধ হিসাবে এই প্রশ্নগুলো করেছেন, যা ইঙ্গিত করে যে উত্থিত বিষয়গুলো কোন সৎ অনুসদ্ধান থেকে হয় নি। যে লোকেরা এই প্রশ্নগুলো জিজ্ঞাসা করছিলেন তারা ঈশ্বরের ক্ষমতাকে সন্দেহের মধ্যে ফেলেছিল। তারা মূলত প্রশ্ন করছিলেন যে কিভাবে বিশ্বাসীদের দৈহিক পুনরুত্থান আদৌ সম্ভব। অধিকন্তু, অনেক টীকাকারকগণ আছেন যারা বিশ্বাস করেন যে, কিছু করিন্থীয়রা এই প্রশ্নগুলো জিজ্ঞাসা করেছেন কারণ তারা পুনরুত্থানকে কোনরুপ রুপান্তর ছাড়াই কেবলমাত্র একটি দেহের উত্থানকে বুঝেছিলেন।
যাই হউক না কেন, যদিও নম্র মনোভাব নিয়ে এই প্রশ্নগুলো জিজ্ঞাসা করা হয় নি, পৌল এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দিতে চেয়েছেন। প্রথমত, প্রেরিত উল্লেখ করেছেন যে, পুনরুত্থান যে সম্ভব এটা ভাবতে তার পাঠকদের কোন সমস্যা থাকা উচিত নয় কারণ আমরা আমাদের প্রতিদিনের অভিজ্ঞতায় পুনরুত্থানের মতো কিছু একটা দেখি। পৌল কৃষি কাজের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষন করেছেন, তিনি ব্যাখ্যা করেছেন যে, বীজ বপন করা হয়েছে এবং তা নূতন চারা উৎপন্ন করার আগে এই প্রক্রিয়ায় মারা যায়। বীজের “দেহ” টি পাতিত, এবং একটি নূতন “দেহ” এর স্থান দখল করে (৩৬-৩৮ পদ)। একটি চারা কিভাবে বৃদ্ধি লাভ করে তা যে কেউ বুঝে তিনি এটা বুঝতে পারবেন, এবং একটি বীজের জন্য একটি নূতন কিছুতে রুপান্তরিত হওয়া যদি অসম্ভব না হয়ে থাকে, তবে আমাদের পুনরুত্থিত দেহগুলোকে একই ভাবে রুপান্তরিত করাটাও ঈশ্বরের জন্য অসম্ভব হবে না। জন কেলভিন মন্তব্য করেছেন, “আমাদের চোখের সামনে ইতিমধ্যে যা প্রকাশিত হয়েছে তা যদি আমরা তাঁর কাছ থেকে সরিয়ে নিই, তবে ঈশ্বরের শক্তি পরিমাপের ক্ষেত্রে আমরা ঘৃনারও অতীত এবং অকৃতজ্ঞ। ”
এটা নিশ্চিত, সেখানে আমাদের বর্তমান দেহগুলো এবং আমাদের পুনরুত্থিত দেহগুলোর মধ্যে ধারাবাহিকতা থাকবে, ঠিক যেমন একটি বীজ এবং এটা থেকে যে চারা গাছ বেড়ে উঠে তার মধ্যে কিছু ধারাবাহিকতা থাকে। তথাপি, সেখানে অধারাবাহিকতাও থাকবে। পুনরুত্থিত দেহের এর নিজস্ব একটি অনুপম মহিমা থাকবে, কেননা সৃষ্টিতে, ঈশ্বর এই পার্থিব জগতে বিভিন্ন ধরণের দেহ এবং বিভিন্ন ধরণের মহিমা দিয়েছেন (৩৮-৪১ পদ)।
ঈশ্বরের মুখগাব্রিয়েল স্বর্গদূত আমাদেরকে বলেন যে, “ঈশ্বরের কাছে কোন কিছুই অসম্ভব হবে না” (লূক ১:৩৭)। ঈশ্বর কিভাবে কাজ করবেন অথবা নূতন স্বর্গ এবং পৃথিবীতে এই জগত কি ধরণের হবে বা কি আকার হবে তা আমরা হয়তো সম্পূর্ণভাবে জানব না, কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে তা ঘটবে না। ঈশ্বর সর্বশক্তিমান- তিনি সর্বশক্তিমান এবং তার সমস্ত পবিত্র ইচ্ছা সিদ্ধ করতে সক্ষম। আমাদের তাঁর শক্তির বিষয়ে সন্দহ করা উচিত হবে না, তিনি যে সমস্ত কিছু মুক্ত করার জন্য সংকল্প করেন, এমন কি আমরা এই দিনে যে কঠিন পরিস্থিতিগুলো মোকাবেলা করি তিনি সমস্ত কিছুই রুপান্তর করতে পারেন।
এই প্রবন্ধটি মূলতঃ লিগনিয়্যার মিনিস্ট্রিজ ব্লগে প্রকাশিত হয়েছিল।