


সমস্ত সান্ত্বনার ঈশ্বর
29-04-2025


দৃঢ়তা, সাহস এবং প্রেম
06-05-2025করিন্থীয়দের প্রতি সমাপনী সম্ভাষন



১ করিন্থীয় ১৬:২১-২৪
“আমার মঙ্গলবাদ আমি পৌল স্বহস্তে লিখিলাম। কোন ব্যক্তি যদি প্রভুকে ভাল না বাসে, তবে সে শাপগ্রস্ত হউক; মারাণ আথা [প্রভু আসিতেছেন]। প্রভু যীশু খ্রীষ্টের অনুগ্রহ তোমাদের সহবর্তী হউক। খ্রীষ্ট যীশুতে আমার প্রেম তোমাদের সকলের সহবর্তী হউক।.”
বিশেষ কয়েকজনের ব্যক্তিগত এবং করিন্থীয় মণ্ডলীর কাছ থেকে মঙ্গলবাদ জানিয়ে, ১ করিন্থীয় পত্রের শেষের পদে পৌল সেই শহরের বিশ্বাসীদেরকে তার ব্যক্তিগত মঙ্গলবাদ জ্ঞাপন করেছেন। তিনি শুরুতেই দৃষ্টি আকর্ষন করে বলেছেন যে, তিনি নিজের হস্তে এই মঙ্গলবাদটি লিখেছেন ( ১ করিন্থীয় ১৬:২১)। মুলত, এখানে প্রেরিত পৌল যা বোঝাতে চেয়েছেন তা হলো এই যে তিনি এখন কলম ধরছেন এবং নিজে ১ করিন্থীয় ১৬:২১-২৪ এই অংশটি লিখতে বসছেন। প্রাচীন যুগে পত্র লেখকগণ তাদের পত্রটি কোন পত্র লেখককে বা মুদ্রণকারীকে দিয়ে লেখাতেন বা পত্রটি লেখার জন্য একজন সেক্রেটারী নিয়োগ করতেন এটা খুবই সাধারণ বিষয় ছিল। পরে, লেখক চুড়ান্ত লেখাটি লিখতেন। ১ করিন্থীয় পত্রের ক্ষেত্রে, মনে হয় যে সোন্থিনী ছিলেন সেই মু্দ্রনকারী (১:১; ২ থিষলণীকিয় ৩:১৭-১৮ দেখুন)।
তার শেষ মঙ্গলবাদে, পৌল আক্রমনাত্নক কথা বলেছেন। “কোন ব্যক্তি যদি প্রভুকে ভাল না বাসে, তবে সে শাপগ্রস্ত হউক” ( ১ করিন্থীয় ১৬:২২)। খুব সম্ভবত, প্রেরিত পৌল এখানে, করিন্থীয়দের জন্য শেষ সতর্কবাণী জ্ঞাপন করেছেন, যেন তারা পত্রের নির্দেশনার প্রতি দৃষ্টিপাত করেন। অন্যভাবে বললে বলা যায়, “প্রভুর জন্য প্রেম না” থাকাটা কেবলমাত্র খ্রীষ্টের প্রতি অনুরাগের অভাবকেই বুঝায় না কিন্তু এর মধ্যে পত্রে উল্লেখিত সেই প্রচার আচরণ চালিয়ে যাওয়ার বিষয়টাও রয়েছে। করিন্থীয়রা তাদের জনপ্রিয় শিক্ষকদের উপর নির্ভর করে এবং অন্যদেরকে নীচু করে দেখে তাদের মধ্যে দলাদলি বাড়িয়ে দিয়েছিল ( ১-৩ অধ্যায়)। পৌলের প্রেরিতত্বের ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন করা তাদের জন্য ভুল ছিল (৪; ৯ অধ্যায়)। মণ্ডলীতে সাংঘাত্নিক ক্ষমার অযোগ্য পাপকে প্রশয় দিয়ে, সাধারণ বিষয় নিয়ে একে অন্যের বিষয়ে মামলা মোকদ্দমা করে, এবং যৌনতার সকল ধরণের বিভ্রান্তীতে সম্পৃক্ত হয়ে, করিন্থীয়রা খ্রীষ্টের ব্যবস্থার সাথে মতানৈক্য সৃষ্টি করছিলেন ( ৪-৭ অধ্যায়)। পৌত্তলিকদের আরাধনার পরিপ্রেক্ষিতে তাদের ভোজনের অভিপ্রায় ছিল পাপ (৮; ১০ অধ্যায়), যেমন ছিল প্রভুর ভোজের সময় তাদের স্বার্থপরতা, তাদের আত্নিক বরদানগুলোর অপব্যবহার, এবং তাদের বিশৃংখল আরাধনা (১১-১২; ১৪ অধ্যায়)। তারা ভবিষতের শরীররে পুনরুত্থানকে অস্বীকার করে বিনষ্টের পথে গিয়েছিল (১৫ অধ্যায়)। সর্বপরি সবদিকে, তাদেরকে সেই মতবাদ বিশ্বাস করে এবং ঈশ্বরের জন্য এবং একে অন্যের জন্য সত্যিকারের প্রেমে জীবন যাপন করে তাদেরকে তাদের ব্যবহার সংশোধন করার প্রয়োজন ছিল (১৩ অধ্যায়)। ১৬:২২ পদের মূল বিষয় হলো এই যে, যদি তারা তাদের আচরণ সংশোধন না করেন, তবে এটা তাদের জন্য একটা প্রমাণ যে তারা খ্রীষ্টকে প্রেম করেন নি এবং এই জন্য তাদেরকে অনন্ত জীবন থেকে বাদ দেওয়া হতে পারে। এই একই পদে প্রভুর আগমনের জন্য পৌলের আহবান করিন্থীয়দের স্মরণ করিয়ে দিয়েছে যে অভিশাপকে প্রভাবিত করার ক্ষমতা যীশুর আছে।
পৌল করিন্থীয়ের বিশ্বাস ঘোষনাকারী বিশ্বাসীদের প্রেম করেন এমন একটি মন্তব্য করে শেষ করেছেন (২৪ পদ)। তার কঠিন কথার মানে এই ছিল না ‡য তিনি তাদের ধ্বংস চেয়েছেন। তিনি এমনভাবে লিখেছেন যেন তিনি তাদেরকে গভীরভাবে প্রেম করেন এবং তিনি তাদের অনুতাপ দেখতে চেয়েছেন।
ঈশ্বরের মুখ
কিছু কিছু সময় আমরা যে প্রেমের কাজটি করতে পারি তা হলো লোকেরা যা শুনতে চায় না তা তাদেরকে বলা। আমরা যখন এমন করব, তখন আমাদের সর্বাত্নক চেষ্টা করা উচিত যেন আমরা প্রেমে আমাদের কথাগুলো বলতে পারি। এটা কঠিন হতে পারে, কিন্তু এক উপায়ে আমরা আমাদের প্রেম দেখাতে পারি তা হলো সেই ব্যক্তিকে ছেড়ে না দিয়ে তাকে সাহায্য করা যেন তিনি নিজে সমস্ত কিছুকে মোকাবেলা করতে পারেন।
এই প্রবন্ধটি মূলতঃ লিগনিয়্যার মিনিস্ট্রিজ ব্লগে প্রকাশিত হয়েছিল।