




মাউন্ট সিয়োনের মতো-গীতসংহিতা ১২৫:১-৫
05-02-2025




ঈশ্বরের নামসমুহ
11-02-2025রোদন, বপন, শষ্য সংগ্রহ – গীতসংহিতা ১২৬:১-৬


কয়েকটি ঘটনা রয়েছে যেগুলো স্বদেশে প্রত্যাবর্তনের চেয়েও আরও বেশী আনন্দঘন। পরিচিত মুখগুলোকে দেখা থেকে শুরু করে আমাদের বিছানায় শুয়ে পড়া পর্যন্ত, আমরা অনেকেই বাড়ীতে আসতে ভালবাসি। গীতসংহিতা ১২৬ প্রাক্তন ক্রীতদাসদের যেহেতু তারা বাড়ীতে ফিরে এসেছে তাদের আনন্দের গীতকে বর্ণনা করে: “তৎকালে আমাদের মুখ হাস্যে পূর্ণ হইল, আমাদের জিহ্বা আনন্দগানে পূর্ণ হইল; তৎকালে জাতিগনের মধ্যে লোকে বলিল, ‘সদাপ্রভু উহাদের নিমিত্ত মহৎ মহৎ কর্ম করিয়াছেন’” (গীতসংহিতা ১২৬:২). নির্বাসনের অনেক বছর পরে, স্বদেশে ফেরার এই চমৎকার ঘটনাটি ঘটেছে। সমস্ত শাস্ত্রের মধ্যে এই শাস্ত্রাংসটিই হয়তো সবচেয়ে বেশী এক আনন্দঘন দৃশ্যকে বর্ণনা করে।
তথাপি, যাদের ৬ পদের “যে ব্যক্তি রোদন করিতে করিতে বপনীয় বীজ লইয়া বাহিরে যায়, সে আনন্দগান-সহ আপন আটিঁ লইয়া আসিবেই আসিবে” এই শিক্ষাটি বুঝতে সমস্যা হয়, তাদেরকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য এই একই গীতেই কিছু বিষয় রয়েছে। গীতরচক কেন একজন কৃষক যিনি প্রতিনিয়ত রোদন করতে করতে বীজ বপন করেন এই দৃশ্যের দিকে দৃষ্টি দিবেন? সম্ভবত তিনি নির্বাসনে থাকাকালীন সময়ে “বপনকৃত” সেই প্রার্থনাগুলো স্মরণ করেছেন। যারা নিজ দেশে, যে দেশ অতি বুড়ো হয়ে গেছে এবং অবহেলিত, সেই দেশে ফিরে আসছিলেন তাদের জন্য এটা অবশ্যই একটি উৎসাহজনক চিন্তা হতে পারে। ক্ষেত্রগুলো পুনরুদ্ধার করা এবং তাতে পুনরায় কাজ করতে হতো। প্রতিজ্ঞাত দেশে পুনরায় বসবাস করা সহজ ছিল না। মন্দিরের ভিত্তি প্রস্তর যখন পুনরায় স্থাপন করা হয়েছিল, প্রাচীন প্রজন্মদের মধ্যে অনেকেই যা হারিয়ে গিয়েছিল তার জন্য রোদন করেছিলেন, যেখানে নূতন প্রজন্মরা আনন্দ সহকারে চিৎকার করেছিল (ইস্রা ৩:১২-১৩)। ঈশ্বরের পরাক্রমশালী উদ্বার কাজের অভিজ্ঞতা লাভ করে, গীতরচক অন্যান্যদের পুনরায় নিশ্চিত করতে পারতেন যে একদিন ফল আসবেই।
মুক্তি্প্রাপ্ত নির্বাসিতদের এই আত্নবিশ্বাসী এই সংগীত বর্তমানে সুসমাচারের অগ্রগতির বিষয়ে আশা রাখতে আমাদেরকে শিক্ষা দিতে পারে। তারা জানতেন যে, ত্রাণকর্তা কে ছিলেন এবং তারা সাক্ষ্য দিয়েছেন যে, পরাক্রমশালী ত্রাণকর্তা। এখন তারা ফিরে এসেছে, এবং তাদের গীতগুলোর মধ্যদিয়ে, দুঃখার্তদের কাছে সুসমাচার প্রচার করেছে। প্রভু যীশু খ্রীষ্টের বাক্য থেকে আমরা জানতে পারি যে, বপন করা মানে হলো ঈশ্বরের বাক্যকে ছড়িয়ে দেওয়া (মার্ক ৪:১৪)। এই কাজটি কঠিন এমনকি আশাহীন মনে হতে পারে। বাক্য প্রচার এবং সুসমাচার প্রচারকে মনে হতে পারে ফলহীন। ছেলেমেয়েরা কখনই ঈশ্বরের বাক্যে সাড়া দিবেনা এই ভেবে অভিবাকগন হতাশ হতে শুরু করতে পারে। প্রাচীন প্রজন্মদের মধ্যে কেউ কেউ কয়েক দশক আগের মণ্ডলীর কথা স্মরণ করতে পারে এবং কোন কোন স্থানগুলোতে যা বর্তমানে দাঁড়িয়ে আছে তা দেখে রোদন করতে পারে। বছর চলে যেতে পারে এবং এমনটি যুগও চলে যেতে পারে, এবং কোন ফল নাও দেখা যেতে পারে। গীতসংহিতা ১২৬ আমাদেরকে সুসংবাদ স্মরণ করিয়ে দেয় যে, সুসমাচার ফল ধরবেই। ক্রুশে খ্রীষ্টের মৃত্যুবরণের পর, শিষ্যদের কাছে মনে হয়েছিল যে সবকিছু শেষ, কিন্তু তিনি কবর থেকে উঠেছেন। তাঁর স্বর্গারোহনের পর, তারা খুবই ছোট একটি সংখ্যালগুদের দল হিসাবে প্রকাশিত হয়েছিল এবং পঞ্চাশত্তমীর দিনে তাদের উপর পবিত্র আত্না ঢেলে দেওয়া হয়েছিল, এবং তাদের সাথে হাজার হাজার লোক যুক্ত হয়েছিল। মণ্ডলীর ইতিহাস চাষের এবং রোপনের, কাজ করার এবং অপেক্ষার, এবং রোদনের এবং আনন্দের অনেক চক্রকে অর্ন্তভুক্ত করে। আমরা দাসত্বের অথবা রোপনের যে সময়েই বাস করি না কেন, আসুন আমরা যেন কখনই হতাশ না হই, কেননা রোপনকারী “আনন্দগান-সহ আপন আটি লইয়া আসিবেই আসিবে” (গীতসংহিতা ১২৬: ৬)।
এই প্রবন্ধটি মূলতঃ লিগনিয়্যার মিনিস্ট্রিজ ব্লগে প্রকাশিত হয়েছিল।